Cyclone Amphan

আমপান-তথ্য সিএজি দলকে

অডিটের সূচনায় প্রথম বৈঠক প্রশাসনিক মহলে ‘এন্ট্রি কনফারেন্স’ নামে পরিচিত। আমপানের ক্ষতিপূরণ বিলি নিয়ে যে অডিট হবে, এ তারই প্রথম পদক্ষেপ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৪:৫৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে আমপান ক্ষতিপূরণ বিলিতে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে সিএজি (কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল)। তদন্তের সূত্রেই শুক্রবার সিএজির এক প্রতিনিধিদল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে ‘এন্ট্রি কনফারেন্স’ করে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর।

Advertisement

অডিটের সূচনায় প্রথম বৈঠক প্রশাসনিক মহলে ‘এন্ট্রি কনফারেন্স’ নামে পরিচিত। আমপানের ক্ষতিপূরণ বিলি নিয়ে যে অডিট হবে, এ তারই প্রথম পদক্ষেপ। তমলুকে সিএজির ওই প্রতিনিধি দলে ছিলেন ডেপুটি অ্যাকাউন্ট জেনারেল নন্দদুলাল দাস এবং সিনিয়র অডিট অফিসার দুর্গেশকুমার শুক্লা। ত্রাণ বিলি সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে একগুচ্ছ প্রশ্নাবলী সিএজির আধিকারিকেরা জেলা প্রশাসনের হাতে তুলে দিয়েছেন।

গত বছর আমপান ঝড়ে রামনগর-১ ও ২, কাঁথি-১ ও ৩, দেশপ্রাণ, খেজুরি-১ ও ২ ব্লক এবং নন্দীগ্রামের দুটি ব্লকে কয়েক হাজার বাড়ি ভেঙে গিয়েছিল। খাদ্যশস্য নষ্ট হয়। কোন কোন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কী ধরনের ক্ষতি হয়েছিল এবং ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকার অন্তর্ভুক্তদের ত্রাণ বাবদ সরকারি অর্থ কী ভাবে দেওয়া হয়েছিল, মূলত সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়েছে সিএজি-র প্রতিনিধিদল।

Advertisement

আমপান মোকাবিলায় তিন দফায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা রাজ্য সরকারের কাছ থেকে ৩০৩ কোটি ৭৪ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা পেয়েছিল। প্রায় তিন লক্ষ ৪০ হাজার পরিবারকে ক্ষতিপূরণের সরকারি ত্রাণ দেওয়া হয়ে‌ছে। যদিও প্রায় এক বছর কাটতে চললেও আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকেই বাড়ি তৈরির টাকা এখনও পাননি বলে অভিযোগ। পানের বরজ এবং মৃত গবাদিপশুর ক্ষতিপূরণ নিয়েও বেনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ। একই পরিবারের একাধিক সদস্য ত্রাণের টাকা পেয়েছেন বলে ইতিমধ্যেই প্রশাসনিক স্তরে অভিযোগ জমা পড়েছে। প্রশাসনিক তদন্তের পর বেশ কয়েকজন ক্ষতিপূরণ প্রাপক সরকারি তহবিলে টাকা ফেরত দিয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা সরকারি ট্রেজারিতে জমা পড়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

এ দিকে, ত্রাণ বাবদ সরকারের পাঠানো প্রায় তিন কোটি ১২ লক্ষ টাকা জেলা প্রশাসন বিলিই করেনি। ওই টাকাও রাজ্য সরকারের কাছে তারা ফেরত পাঠিয়েছে। এত সবের পরেও আমপানের ক্ষতিপূরণ নিয়ে জেলা জুড়ে দুর্নীতি আর স্বজনপোষণের অভিযোগ প্রচুর। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন ২৫টি ব্লক এবং পাঁচটি পুরসভা থেকে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেছে। ওই তথ্য সিএজির প্রতিনিধি দলের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। জেলার প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের আধিকারিক মৃত্যুঞ্জয় হালদার বলেন, ‘‘সিএজির প্রতিনিধিদল জেলা সদরে রয়েছেন। তাঁরা সমস্ত তথ্য পরীক্ষা করে দেখছেন।’’ পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক বিভু গোয়েল বলেন, ‘‘সিএজি-র প্রতিনিধিদের সঙ্গে এন্ট্রি কনফারেন্স হয়েছে। ওরা যে সব তথ্য চেয়েছিল, সমস্তই আমরা দিয়েছে। সেই সব তথ্য খুঁটিয়ে যাচাই করে দেখার পর ফের আমাদের সঙ্গে আলোচনা হবে।’’

এর আগেও দু’দফায় জেলায় ঘুরে গিয়েছে সিএজি প্রতিনিধি দল। তবে এবার হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে প্রায় এক মাস থাকবে এই তদন্তকারীরা। তাঁরা বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখতে পারেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement