তমলুকে সাংগঠনিক সভায় দিলীপ ঘোষ ও সায়ন্তন বসু। নিজস্ব চিত্র
২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের পুনরাবৃত্তি এ বারের পুরভোটে হতে দেবেন না। এমনই হুঁশিয়ারি দিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি তথা মেদিনীপুরের দিলীপ ঘোষ।
রবিবার পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে দলের জেলা কমিটির বর্ধিত সভায় যোগ দিতে এসেছিলেন দিলীপ। সভায় দলের জেলা ও ব্লক নেতৃত্বদের নিয়ে সাংগঠনিক আলোচনার পাশাপাশি আসন্ন পুরভোট নিয়ে আলোচনা হয়। গত পঞ্চায়েত ভোটের মতো পুরসভার ভোটে যদি বাধা আসে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে দিলীপ বলেন, ‘‘তখন আমরা আশাও করতে পারিনি যে, নির্বাচনে অংশ করতে দেওয়া হবে না। মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হবে না। তাই প্রস্তুতি নিতে একটু দেরি হয়ে গিয়েছিল। তবে এ বার আর সেটা হবে না। আমরাও সব রকমভাবে প্রস্তুত আছি। যে রকম পরিস্থিতি হোক, সেরকম লড়াই করব আমরা।’’
পুরভোটের জন্য দলের প্রস্তুতি নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, ‘‘পুরভোটের প্রস্তুতি জোরকদমে চলছে। তার বৈঠকও হয়ে গিয়েছে। পুরসভার ভোটে সর্বশক্তি নিয়ে লড়াই করার জন্য সমস্ত রকম পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আর দলের কর্মীরাও নির্বাচনী কাজে নেমে পড়েছেন। যেখানে সাংগঠনিক দুর্বলতা ছিল সেগুলি আমরা ঠিক করে দিয়েছি। পুরো শক্তি দিয়েই আমরা লড়াই করব। তৃণমূল বুঝতে পারবে, বিজেপি কীরকম বিরোধী শক্তি।’’
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় বিজেপি নেতা-কর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, ‘‘সারা রাজ্য জুড়ে আমাদের কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। কারণ বিজেপির যে অগ্রগতি হচ্ছে তা কোনওভাবেই তৃণমূল আটকাতে পারছে না। রাজনৈতিকভাবে পারছে না, গণতান্ত্রিকভাবেও পারছে না। তাই গুন্ডা ও পুলিশ দিয়ে আমাদের আটকানোর চেষ্টা করছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের নেতা- কর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা দেওয়া হচ্ছে। এমনকী যেখানে আমাদের দলীয় নেতৃত্বের উপস্থিতি নেই, সেখানেও তাঁর নামে মামলা হয়ে যাচ্ছে। কোর্ট, কাছারি, পুলিশ, জেল, এটাই চলছে। আমরা এর বিরুদ্ধে লড়াই করে এতদূর এগিয়েছি। বাকিটাও এই সব বাধা দূর করে এগোব এবং রাজ্যে রাজনৈতিক পরিবর্তন আনব।’’
পুরভোট নিয়ে দিলীপের হুঁশিয়ারির পাশাপাশি এদিন ময়নার বাকচায় আক্রান্ত দলীয় কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে তৃণমূলের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসুও। সায়ন্তন বলেন, ‘‘এই এলাকায় গত লোকসভা ভোটে বিজেপি এগিয়ে ছিল। তারপর থেকে বিজেপি করার অপরাধে থাকায় দলীয় নেতা-কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুর হয়েছে, লুঠ করা হয়েছে। পুলিশ অভিযোগ নেয়নি। উল্টে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে আমাদের নেতা-কর্মীদের। তাঁদের অনেকে ঘরছাড়া। প্রতিদিন এখানে বোমাবাজি হচ্ছে। আমি কর্মীদের বলেছি রাতে পাহারার ব্যবস্থা করতে। যারা বোম টোম নিয়ে আসবে। তাদের ধরে গাছে বেঁধে রেখে আমাদের খবর দিতে। তারপর আমরা তার বিচার করব।’’