Trident Lights Digha

বিকল ত্রিফলা জ্বালাতে উদ্যোগী পর্ষদ

২০২০ সালে আমপানে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সৈকত শহর দিঘার বিদ্যুৎ পরিষেবা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল দিঘার ত্রিফলা বাতির স্তম্ভগুলি। সেসময় সেগুলি সারানো হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দিঘা শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০২৩ ০৯:৩৬
Share:

ওল্ড দিঘায় খারাপ হয়ে পড়ে ত্রিফলা বাতিস্তম্ভ। —নিজস্ব চিত্র

এক দশক পূর্ণ হল না। বেহাল সৈকত শহর দিঘার রাস্তার অধিকাংশ ত্রিফলা বাতি। ওই সব বিকল ত্রিফলা বাতির সম্পর্কে খোঁজখবর শুরু করল দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ (ডিএসডিএ)। কোন কোন ত্রিফলা পথবাতি কেমন অবস্থায় রয়েছে, আদৌ সেগুলি সারিয়ে তোলা সম্ভব কি না— তা জানতে সমীক্ষা করছেন ডিএসডিএ কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

২০১১ সালে রাজ্যে রাজনৈতিক পালা বদলের পর দিঘার সৌন্দর্যায়নে জোর দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সৈকতের এই পর্যটন কেন্দ্রকে সুদৃশ্য আলোকমালায় সাজিয়ে তুলতে বসানো হয়েছিল ত্রিফলা পথবাতি। তৎকালীন ডিএসডি-এর চেয়ারম্যান তথা কাঁথির বর্তমান সাংসদ শিশির অধিকারীর নির্দেশে দরপত্র হয়। এরপর দিঘায় প্রবেশদ্বারের আগে রামনগর-১ ব্লকের ঘেরসাই থেকে দিঘা বর্ডার পর্যন্ত রাস্তার দুদিকে বসে ছিল কয়েক হাজার ত্রিফলা বাতি। মাঝেমধ্যে খারাপ হলেও কিছুদিনের ব্যবধানে পুনরায় জ্বলে উঠত সেই সব ত্রিফলা। পরে শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যের মন্ত্রী থাকাকালীন পরিবহন দফতরের উদ্যোগে ওল্ড এবং নিউ দিঘা জুড়ে রাস্তার দুদিকেই বসেছিল সুদৃশ্য এলইডি বাতি। এরপর থেকে খানিকটা কদর কমেছে ত্রিফলা বাতি স্তম্ভের।

২০২০ সালে আমপানে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সৈকত শহর দিঘার বিদ্যুৎ পরিষেবা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল দিঘার ত্রিফলা বাতির স্তম্ভগুলি। সেসময় সেগুলি সারানো হয়েছিল। যদিও কিছুদিনের মধ্যেই পুনরায় প্রায় সমস্ত ত্রিফলা বাতিস্তম্ভ বিকল হয়ে যায়। তারপর ডিএসডিএ আর সেগুলি সারাতে উদ্যোগী হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ইয়াস ঝড় পরবর্তী সময়ে দিঘাকে আরও সুসজ্জিত করেছে ডিএসডিএ এবং জেলা প্রশাসন। কিন্তু রাতের সৈকত শহরে ত্রিফলা বাতি জ্বলে না দেখে খানিকটা হতাশ পর্যটক। গত সপ্তাহে ই হাওড়ার বাগনান থেকে সপরিবারে বেড়াতে এসেছিলেন বিশ্বজিৎ জানা। বিশ্বজিৎ বলছেন, ‘‘এলইডি আলো যথেষ্ট উজ্জ্বল। এতে বিদ্যুৎ খরচ অনেক সাশ্রয় হয়। তবে ত্রিফলা বাতিতে রাতের দিঘা অনেক মোহময়ী লাগে। যা এখন খুব মিস করি।’’ ত্রিফলা বাতি কেন দীর্ঘদিন অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে, স্থানীয়রাও তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তারা জানাচ্ছেন, ওল্ড দিঘা এবং নিউ দিঘাতে বেশ কয়েকটি জায়গাতে রাস্তা দুদিকে বড় গাছের ছায়ায় এলইডি বাতি স্তম্ভের আলো ঠিকমতো দেখা যায় না। যত্রতত্র গবাদি পশু কিংবা বর্জ্য পড়ে থাকে রাস্তার উপর। এক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত নিচু ত্রিফলা বাতি যদি জ্বলে তাহলে অনেকটাই সমস্যা এড়ানো যায়।

Advertisement

ডিএসডিএ সূত্রের খবর, দিঘায় মোট কতগুলি ত্রিফলা বাতি খারাপ হয়েছে, তা জানতে সমীক্ষা শুরু করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বিদ্যুৎ বিভাগের আধিকারিক এবং কর্মীরা গোটা সৈকত শহর ঘুরে তারা ত্রিফলা বাতি স্তম্ভগুলিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছেন। সারাতে কত খরচ পড়তে পারে, তার প্রাথমিক রূপরেখা তৈরি করা হচ্ছে। তাঁরা ডিএসডিএ-র দফতরে একটি রিপোর্ট জমা দেবেন। সেই রিপোর্টের উপরে ত্রিফলা বাতি স্তম্ভগুলির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের কার্যনির্বাহী আধিকারিক মানস কুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘ত্রিফলা বাতি স্তম্ভগুলি কী অবস্থায় রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কতগুলি বাতিস্তম্ভ খারাপ হয়েছে, সেই সংক্রান্ত বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।"

বারবার দিঘায় ত্রিফলা বাতি খারাপ হয়ে যাওয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ করছে বিরোধীরা। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি অসীম মিশ্র বলেন, ‘‘কখনও ত্রিফলা বাতি, আবার কখনও এলইডি বাতির দরপত্র পাইয়ে দেওয়ার নামে শাসক দল ঠিকাদারদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা ঘুষ নিয়েছে।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের বিদায়ী সভাধিপতি উত্তম বারিক বলছেন, ‘‘বিরোধীরা শুধু অপপ্রচার করার জন্য
অভিযোগ করছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement