শনিবারের ছুটিতে ফাঁকা দিঘার সৈকত। নিজস্ব চিত্র।
সপ্তাহ শেষের ছুটি। কিন্তু তার মধ্যেই ঘূর্ণিঝড় রেমালের ভ্রুকুটি। এ দিকে কাঁথি এবং তমলুক কেন্দ্রে লোকসভা ভোটের আবহ। এই পরিস্থিতিতে শুনশান দিঘা। তবে উল্টো ছবি মন্দারমণিতে।
শনিবার লোকসভা ভোট পর্ব মিটে গিয়েছে কাঁথিতে। আর আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, এদিন গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে রেমাল। রবিবার ভোর থেকে ঝড়ো হাওয়া এবং প্রবল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে শনিবার দিনভর রোদ ঝলমলে আবহাওয়া ছিল দিঘায়। বাতাসের গতিবেগ কিছুটা বেড়েছে। সমুদ্র অনেকটাই উত্তাল। ওল্ড দিঘায় ব্লু ভিউ ঘাট থেকে সি হক ঘাট পর্যন্ত একের পর এক ঢেউ আছড়ে পড়েছে গার্ডওয়ালের ওপারে। সমুদ্রে পর্যটকদের স্নান করতে দেয়নি প্রশাসন। স্নান ঘাটগুলিকে দড়ি দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। নিউ দিঘায় সামান্য পর্যটক ছিলেন। তবে ওল্ড দিঘা ছিল প্রায় ফাঁকা। হাতেগোনা কয়েকজন সমুদ্রের উত্তাল রূপ মোবাইল বন্দি করতে ব্যস্ত ছিলেন।
রবিবার ছুটি রয়েছে। শনিবারেও বহু দফতরে ছুটি। আগামী ৩ জুন রাজ্যের সমস্ত স্কুল এবং কলেজ খুলতে চলেছে। তার আগে এটাই শেষ শনিবার। প্রবল ভিড় হওয়ার কথা। কিন্তু কেন ফাঁকা? দিঘা হোটেল মালিক সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, "ভোটের কারণে অধিকাংশ হোটেল এবং লজের কর্মীরা বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। সে জন্য সমস্যা হতে পারে আশঙ্কা করে অনেকে চলতি সপ্তাহে আসার পরিকল্পনা বাতিল করেছেন।"
ওল্ড এবং নিউ দিঘা মিলিয়ে প্রায় দেড় হাজার হোটেল এবং লজ রয়েছে। প্রতিবার ঘূর্ণিঝড়ের আগে উৎসাহী পর্যটকেরা দিঘা যান। তবে রেমালে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করে ২৬ মে পর্যন্ত ৮টি ট্রেন বাতিল করেছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি জারি করে রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২২৮৯০ পুরী-দিঘা সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেস ট্রেনটি ২৫ মে শনিবার পুরী থেকে ছাড়বে এবং খড়গপুর পর্যন্ত যাবে। ২২৮৯৭ হাওড়া-দিঘা কান্ডারী এক্সপ্রেস ২৬ মে এই ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। ০৮১৩৭ পাঁশকুড়া-দিঘা মেমু প্যাসেঞ্জার স্পেশাল ২৬ মে ট্রেনটি বাতিল করা হয়েছে। ০৮১৩৯ পাঁশকুড়া-দিঘা লোকালটি ২৬ তারিখে বাতিল করা হয়েছে। ০৮১৩৬ দিঘা পাঁশকুড়া লোকাল ট্রেন এবং ০৮১৩৮ দিঘা-পাঁশকুড়া মেমু প্যাসেঞ্জার স্পেশাল ২৭ মে বাতিল করা হয়েছে।২২৮৮৯ দিঘা-পুরী সুপার ফাস্ট সাপ্তাহিক ট্রেনটি রবিবার দিঘার পরিবর্তে খড়গপুর থেকে ছাড়তে চলেছে। একই সঙ্গে ২২৮৯৮ দিঘা-হাওড়া কান্ডারী এক্সপ্রেস ২৬ মে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
তবে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা সত্ত্বেও শনিবার ভিড় মন্দারমণিতে। এদিন সন্ধ্যায় অনেকটা গুমোট আবহাওয়া ছিল। খানিকটা স্বস্তি পেতে সমুদ্র সৈকতের ধারে বেরিয়ে পড়েন কাতারে কাতারে পর্যটক। স্থানীয় এক দোকানদার সুমন মিশ্র বলছেন, "ভেবেছিলাম ভোট আর ঝড়ের কারণে হয়তো কেউ আসবেন না। তবে বিকেল থেকে বিক্রিবাটা বেশ ভালই হচ্ছে।"