‘উইন্টার স্কুল’ শুরু হল বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশেষ এই স্কুলে হাতে-কলমে শেখানো হবে ‘জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেম’ (জিআইএস)-এর খুঁটিনাটি। ২১ দিনের এই পাঠ্যক্রমের বিষয় ‘জিওস্প্যাটিয়াল টেকনোলজিস’। বুধবার এই উইন্টার স্কুলের সূচনা হল।
(জিআইএস) একটি সফটওয়্যার। এই সফটওয়্যার কাজে লাগিয়ে বিশ্বের যে কোনও জায়গার তথ্য হাতের মুঠোয় নিয়ে আসা সম্ভব। কী ভাবে তা করা যায়, সে বিষয়েই উৎসাহী ব্যক্তিদেরই এই পাঠ্যক্রমে বিস্তারিত বোঝানো হবে। শেখানো হবে হাতে কলমেও।
সবস্তরেই এই প্রযুক্তিকে ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগ (ডিএসটি)। কেন্দ্রের আর্থিক সহযোগিতায় কাজটি করছে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়। প্রশিক্ষণের জন্য ডিএসটি ১০ লক্ষ টাকাও দিয়েছে। ৩০ জনকে দেওয়া হচ্ছে এই প্রশিক্ষণ। যাঁরা সকলেই বিভিন্ন কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা।
প্রশিক্ষণের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক বিধানচন্দ্র পাত্র বলেন, “প্রতিদিন উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়ছে ভূপ্রকৃতি, উদ্ভিদ, প্রাণীর নানা পরিবর্তন ধরা পড়ছে। কোথায় কী পরিবর্তন ঘটছে বাড়িতে বসেও তা জানা সম্ভব। কী ভাবে জানা যাবে, তা বোঝাতেই এই প্রশিক্ষণ।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তীর কথায়, “এই ধরনের কাজ এখন বিশ্বজুড়েই চলছে। এই প্রশিক্ষণ কাজে লাগবে বলেই আমার ধারণা।”
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বিশ্বজুড়ে প্রতিদিন কতই না পরিবর্তন ঘটে চলেছে। উপগ্রহ চিত্রে সহজেই তা দেখা সম্ভব। গাছ, নদী, নালা, সমুদ্র, প্রাণী সব কিছুর পরিবর্তনই ধরা যাবে ‘জিওস্প্যাটিয়াল টেকনোলজিস’এর মাধ্যমে। যার প্রধান লক্ষ্য ‘বায়ো রিসোর্স কনজারভেশন’।
কী ভাবে? বিধানবাবু জানান, ধরা যাক পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চিল্কিগড়ে বিলুপ্তপ্রায় বহু গাছ রয়েছে। আগে আরও কত বেশি গাছ ছিল তা পুরনো ছবি থেকে দেখা যাবে। আবার কয়েক বছর পরে ছবি দেখলে বোঝা যাবে ওই গাছ একই রকম আছে না বৃক্ষছেদন করা হয়েছে। যা দেখে প্রশাসন সংশ্লিষ্ট স্থানটি রক্ষা করতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করতেও পারবে। সুবিধে হবে গবেষণার কাজে যুক্ত ছাত্র-শিক্ষকদেরও।
বিধানবাবুর কথায়, “অন্যান্য রাজ্য এ বিষয়ে এগিয়ে থাকায় সেখানকার ছাত্রেরা আমাদের সমুদ্র উপকূল নিয়ে গবেষণা করে পিএইচডি করে ফেলছেন। রাজ্যের ছাত্রেরা পারছে না। এটা করা গেলে শিক্ষা ক্ষেত্রেও প্রভূত উন্নতি ঘটবে।”
এ দিনের অনুষ্ঠানে ‘সেন্ট্রাল ইনল্যান্ড ফিসারিজ ইন্সটিটিউট’-এর ডিরেক্টর বসন্তকুমার দাস, এনআরডিএমএসের পরামর্শদাতা দেবপ্রিয়া দত্তও উপস্থিত ছিলেন।