আটশো ছুঁল ডেঙ্গি 

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা অবশ্য বলছেন, ‘‘ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। তবে এ নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। আক্রান্তরা প্রায় সকলেই সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। কয়েকজনই এখনও চিকিৎসাধীন।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:০১
Share:

অস্বাস্থ্যকর: মেদিনীপুর মেডিক্যাল চত্বরে মোষের দল। নিজস্ব চিত্র

নভেম্বরেও চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গি। বেড়েই চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা।

Advertisement

জানা যাচ্ছে, পশ্চিম মেদিনীপুরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা গত কয়েক বছরের রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রে খবর, চলতি বছরে ইতিমধ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৮০০ ছাড়িয়েছে। গত কয়েক বছরের থেকে যা বেশি। এখনও ডিসেম্বর পড়ে রয়েছে। ফলে, এ বার আক্রান্ত আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা অবশ্য বলছেন, ‘‘ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। তবে এ নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। আক্রান্তরা প্রায় সকলেই সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। কয়েকজনই এখনও চিকিৎসাধীন।’’ তিনি আরও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘জেলায় ডেঙ্গিতে কারও মৃত্যু হয়নি। পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে।’’ জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গিও বলেন, ‘‘জেলায় এই মুহূর্তে ডেঙ্গি পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। তার মানে এটা নয় যে আমরা আত্মতুষ্টিতে রয়েছি। জেলার স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রত্যেকেই সতর্ক রয়েছেন।’’

Advertisement

জেলার মধ্যে খড়্গপুর পুর-এলাকা, খড়্গপুর- ১ এবং ২ ব্লক, ডেবরা, পিংলা, কেশপুর, মোহনপুর, চন্দ্রকোনা- ২, দাসপুর- ১ প্রভৃতি এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। জানা যাচ্ছে, ২০১৫ সালে যেখানে জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছিলেন ৯৮ জন, ২০১৬ সালে ৫৭১ জন, ২০১৭ সালে ৬৪১ জন, ২০১৮ সালে ৮০৩ জন। সেখানে চলতি বছরে নভেম্বরের মধ্যেই জেলায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৮০৬ জন। এক সূত্রের খবর, এরমধ্যে সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গি নির্ণয় হয়েছে ৫১৪ জনের। বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গি নির্ণয় হয়েছে ২৮৮ জনের। ওই সূত্র জানাচ্ছে, ২০ থেকে ২৫ নভেম্বর- শুধুমাত্র এই সময়ের মধ্যেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৫ জন।

পশ্চিম মেদিনীপুরের কয়েকটি এলাকা ডেঙ্গি প্রবণ বলেই পরিচিত। প্রায় প্রতি বছরই জেলায় মশাবাহিত এই রোগের প্রকোপ দেখা দেয়। নভেম্বরেও যে ভাবে একের পর এক এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলছে তাতে চিন্তিত অনেকে। জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের অবশ্য বক্তব্য, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের জন্য আবহাওয়া খারাপ হয়েছিল। তাই এই পরিস্থিতি। জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কথায়, ‘‘গত সেপ্টেম্বর থেকে একের পর এক ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে ডেঙ্গির ক্ষেত্রে এখনকার আবহাওয়া যথেষ্ট অনুকূল থাকলেও তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে।’’ তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘ডেঙ্গির প্রতিরোধ নির্ভর করে জীবাণুবাহী মশা নিয়ন্ত্রণ ও তার কামড় থেকে বাঁচার উপরে। মশা নিয়ন্ত্রণের প্রাথমিক পদ্ধতি হল এর বৃদ্ধির পরিবেশকে ধ্বংস করা। ডেঙ্গির মশা সাধারণত স্থির ও পরিস্কার জলে ডিম পাড়ে। তাই বাড়ির চারপাশে যাতে কোনও জায়গায় জল না জমে থাকে তা দেখতে হবে। বাড়ির আশেপাশে ভাঙা পাত্র, নর্দমা বা ডোবাতে জল জমতে না দেওয়া ও পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত জরুরি। শরীর পোশাকে ঢেকে রাখা, ঘুমানোর সময়ে মশারি ব্যবহার করার উপরে জোর দিতে হবে।’’

এক স্বাস্থ্য আধিকারিক জানাচ্ছেন, আগামীতে আরও সচেতন হতে হবে। এখন যেমন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে সেটা চলবে। আবার জানুয়ারি মাস থেকেও আলাদাভাবে রোগ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement