নালার জন্য খোঁড়া হয়েছে রাস্তা। কাজ শেষ হয়নি। সমস্যায় বাসিন্দারা। —নিজস্ব চিত্র
মাস কয়েক পরেই নতুন জেলা ঝাড়গ্রাম আত্মপ্রকাশ করবে। ঝাড়গ্রাম শহরই হবে জেলার সদর শহর। যদিও নোটের চোটে থমকে শহরের পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ।
শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে অরণ্যসুন্দরী অতিথিশালা থেকে কদমকানন রেল গেট পর্যন্ত রাস্তার ধারে পাকা নিকাশি নালা তৈরি হচ্ছে। যদিও মাঝপথেই বন্ধ হয়ে রয়েছে নালার কাজ। একাংশ ঠিকাদারের সাফাই, খুচরোর আকালে শ্রমিকদের মজুরি দেওয়া যাচ্ছে না। ইট, বালি কিনতে হয় নগদে। ব্যাঙ্ক থেকে পর্যাপ্ত টাকা না মেলায় প্রয়োজনীয় সরঞ্জামও কেনা যাচ্ছে না। সমস্যার জন্য বাধ্য হয়ে সাময়িক ভাবে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু এ ভাবে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে সমস্যায় পড়েছেন একাংশ শহরবাসী।
স্বেচ্ছাসেবী মহিলা সংগঠন ‘সুচেতনা’-এর কার্যালয়ের সামনে নালা তৈরির জন্য মাটি খোঁড়া হয়েছে। কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ায় মাটি ওইভাবে খোঁড়াই রয়েছে। এর ফলে ওই সংস্থার দফতরে ঢোকা যাচ্ছে না। সংস্থার সম্পাদক স্বাতী দত্ত থাকেন ওই ভবনের দোতলায়। তিনি বলেন, “কাজ বন্ধ থাকায় সমস্যার মধ্যে রয়েছি। একটি পাটাতনের উপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।” সংস্থার কর্মী মানসী ঘোষ, রেবতী মুর্মুদের কথায়, “প্রতিদিন জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকার মহিলারা তাঁদের সমস্যা ও অভিযোগ জানাতে সংস্থায় আসেন। কিন্তু রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ির জন্য বাড়িতে ঢুকতে সমস্যা হচ্ছে।’’
যে ঠিকাদার নিকাশি নালার কাজের বরাত পেয়েছেন, তিনি আবার ঠিকা শ্রমিক নিয়োগের সাব কন্ট্রাক্ট দিয়েছেন অন্য এক ঠিকাদারকে। সেই ঠিকাদারের বক্তব্য, “কী করব, নগদের সমস্যার জন্য শ্রমিকদের মজুরি দেওয়া যাচ্ছে না। তাই নোটের সমস্যা না মেটা পর্যন্ত শ্রমিকদের কাজে নিতে পারছি না। তাই কাজ বন্ধ রয়েছে।” ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর ঘনশ্যাম সিংহ বলেন, “নোটের সমস্যার জন্য উন্নয়নের কাজে সমস্যা হচ্ছে।”
পুরসভা সূত্রের খবর, এখন শহরের ১৮টি ওয়ার্ডে ৩৫ টি প্রকল্পের কাজ চলেছে। এর মধ্যে শহরে মোট ৭ কিলোমিটার পাকা নালা তৈরি হচ্ছে। প্রায় দশ কিলোমিটার পিচ ও ঢালাই রাস্তা তৈরির কাজ চলেছে। নোটের সমস্যায় বেশির ভাগ কাজের গতি মন্থর হয়ে গিয়েছে। কতগুলি প্রকল্পের কাজ সাময়িক বন্ধ। একই কারণে থমকে গিয়েছে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের আওতায় একটি শয্যাবিহীন নগর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবন তৈরির কাজও ।১৫ নম্বর ওয়ার্ডে মূল রাস্তা থেকে ইয়ুথ ক্লাব যাওয়ার একটি রাস্তা সংস্কারের কাজের বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদার জহর সাহা বলেন, “নোটের সমস্যার জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল কিনতে পারছি না। তাই কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছি। এ দিকে কাজে দেরি হওয়ায় নির্মাণ খরচও বেড়ে যাচ্ছে।”