ভিড় নেই বইমেলা চত্বরে। সোহম গুহর তোলা ছবি।
নোট বাতিল আর খুচরো টাকার সমস্যার জেরে বিক্রি কমল কাঁথি বইমেলাতেও। চলতি বছরে অন্য বছরের থেকেও ৫০ শতাংশেরও বেশি বই বিক্রি কমে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। একই মত, বইমেলায় যোগ দেওয়া বিভিন্ন বইপ্রকাশনা সংস্থারও। বইমেলার বিক্রেতাদের এই দাবি মেনে নিয়েছেন কাঁথি বইমেলা কমিটি।
কাঁথি শহরের রাও রিক্রিয়েশন প্রাঙ্গণে গত ২৫ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া ১৭তম বইমেলায় প্রতিদিন গড়ে দু’হাজার মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন। তাঁদের অধিকাংশই আবার বই কিনছেন না। কাঁথি বইমেলা কমিটির দুই সহ-সভাপতি অধ্যাপক অমলেন্দুবিকাশ জানা ও দিলীপ দাস বলেন, ‘‘কাঁথি বইমেলার দীর্ঘ ১৭ বছরের ইতিহাসে এমন ঘটনা ঘটেনি। প্রতি বছর বইমেলায় গড়ে যেখানে সাত থেকে আট হাজার ভিড় জমে। সংখ্যাটা মাঝে মাঝে দশ হাজারও ছাড়িয়ে যায়। সেখানে এ বছর প্রতিদিন গড়ে দু’তিনহাজারও মানুষও আসেননি মেলায়।
খুচরো টাকার সমস্যার কারণেই মুলত মানুষ বইমেলামুখী হতে চাইছেন না বলে মনে করছেন বইমেলা কমিটি সদস্য সমরবরণ মান্না ও সুমন বাখরা। তাঁদের কথায়, “নোট বাতিল আর ব্যাঙ্ক থেকে পর্যাপ্ত টাকা না মেলায় সাধারণ মানুষের হাতে নগদ টাকার কমে গেছে। নগদ টাকা হাতে পর্যাপ্ত না থাকার কারণে সাধারন মানুষের কাছে আর বই কিনতে চাইছেন না বা পারছেন না।’’
সবথেকে করুণ অবস্থা বইমেলায় যোগ দেওয়া বিভিন্ন প্রকাশনীর বই বিক্রেতাদের। বইমেলায় নিজেদের স্টলে বসে অন্নপূর্ণা প্রকাশনীর অজয় দাস, ছায়া পাবলিকেশনের রবীন্দ্রনাথ বালা ও নিউ ভৈরবী প্রকাশনীর মনোজ সাহু বলেন, “এবারের বইমেলায় বিক্রির অবস্থা এতই খারাপ যে লাভ তো দুরের কথা, মেলায় বই নিয়ে আসা যাওয়ার খরচ উঠবে কিনা সেটাই বিরাট প্রশ্ন হিসেবে দেখা দিয়েছে।” তাঁরা আরও জানান, বইমেলায় আসা সীমিত সংখ্যক মানুষজনও দু’শো তিনশো টাকার বই পছন্দ করে দু’হাজার টাকার নোট ধরিয়ে দিচ্ছেন। এত টাকার খুচরো দিতে পারা সম্ভব না হওয়ায় ক্রেতারাও বই না কিনেই ফিরে যাচ্ছেন। আগে যেখানে গড়ে আট থেকে দশহাজার টাকার বই বিক্রি হত, এ বার সেখানে দেড় দু’হাজার টাকারও বিক্রি হচ্ছে না।”
আজ, রবিবার দশদিন ব্যাপী বইমেলার শেষ দিন। শেষের দু’দিন শনিবার ও রবিবার। আর মাসের প্রথম দিক হওয়ায় কাঁথি বইমেলায় ভিড় কিছুটা বাড়বে বলেই আশা বইমেলা আয়োজক কর্তাদের। লোকসানের বাজারে শেষের দিন কতটা লাভ এনে দেয়, অপেক্ষা তারই।