ভেঙে যাচ্ছে সমুদ্র বাঁধ। ক্ষতির মুখে মেরিন ড্রাইভ। নিজস্ব চিত্র
তাপপ্রবাহ চলছিল কয়েক দিন ধরে। এরই মধ্যে সমুদ্রে জলোচ্ছ্বাস। তাতেই বাঁধ ভাঙার আতঙ্কে দিন কাটছে উপকূলের বাসিন্দাদের। কারণ, অমাবস্যার কটালের জলোচ্ছ্বাসে দিঘা মোহনার অদূরে ন্যায়কালী মন্দিরের কাছে কিছুটা এলাকা জুড়ে সমুদ্র বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। ধসছে মাটি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বুধবার রাত থেকে অমাবস্যার কটাল শুরু হয়েছে। তার জেরে সমুদ্রে জলোচ্ছ্বাসে হচ্ছে। তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দিঘা-মন্দারমণি মেরিন ড্রাইভও। মূলত দিঘা থেকে যে সমুদ্রের বাঁধ শঙ্করপুর হয়ে মন্দারমণি গিয়েছে, তার উপরেই মেরিন ড্রাইভ তৈরি হয়েছে। বাঁধের যে অংশ সমুদ্রের দিকে রয়েছে, সেখান থেকেই বিরাট অংশ জুড়ে মাটি ধসে ঢেউয়ে তলিয়ে যাচ্ছে। তাতে আতঙ্কিত পূর্ব মুকুন্দপুর, অশনপুর মির্জাপুর, মৈত্রাপুর গ্রামের প
রায় কয়েক হাজার বাসিন্দা। এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘দু-তিন দিন ধরে মেরিন ড্রাইভের বাঁধের গা থেকে প্রচুর মাটি ধসে চলে গিয়েছে সমুদ্রে। বর্ষাকালের আগে যদি আর কোনও শক্তিশালী জলোচ্ছ্বাস হয়, তবে ফের জনবসতি তছনছ হয়ে যাবে।’’ কয়েকজন মহিলা বলছেন, ‘‘২০২১ সালে ইয়াসে বাঁধের উপর দিয়ে হু হু করে জল ঢুকে গিয়েছিল গ্রামে। বাড়ি ছাড়া দিনের পর দিন ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিতে হয়েছিল। নতুন করে বাঁধ ভাঙছে। তাই আতঙ্কিত।
শুক্রবার রামনগর-১ ব্লকের পদিমার ওই সব এলাকা পরিদর্শন করেন কাঁথির মহকুমাশাসক শৌভিক ভট্টাচার্য এবং ব্লক প্রশাসন, স্থানীয় গ্রাম- পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিরা। দু'বছর আগে ইয়াস ঘূর্ণিঝড়ের সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে এই সব এলাকাতেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল মেরিন ড্রাইভ। তাজপুর থেকে শঙ্করপুর পর্যন্ত এলাকায় মেরিন ড্রাইভ একেবারে তছনছ হয়ে গিয়েছে। যা এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণরূপে সারিয়ে উঠতে পারেনি সেচ দফতর। এর মধ্যে ফের ওই পরিস্থিতি। গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, কয়েক মাস পরেই আবার শুরু হবে ষাড়াষাড়ির কটাল। ফলে তাঁদের দুশ্চিন্তা কাটছে না। প্রশাসন জানাচ্ছে, আপাতত শাল গাছের খুঁটি দিয়ে এবং পিছনের দিকে ঢাল বরাবর মাটি ফেলে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ দিন পরিদর্শনের পরে মহকুমাশাসক শৌভিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘গ্রামবাসীদের আশঙ্কা একেবারে অমূলক নয়। মেরিন ড্রাইভের উপর দিয়ে জলোচ্ছ্বাস হলে সে ক্ষেত্রে কিছু করণীয় নেই। তবে, যেভাবে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা দ্রুত মেরামত করার জন্য চেষ্টা চলছে। সেচ দফতরের সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তাও হয়ে গিয়েছে।’’