দলত্যাগীকে কাউন্সিলর পদেও ইস্তফা দিতে হবে, এমনই দাবি তুলল সিপিএম। শনিবার খড়্গপুরের ইন্দায় জোনাল কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে এ কথা জানান শহরের সিপিএম নেতারা। দলের আর কোনও কাউন্সিলর ভবিষ্যতে এ ভাবে দলবদল করবেন না বলেও দাবি করেছে সিপিএম।
গত মাসেই সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সরিতা ঝাঁ। সরিতার এ বার কাউন্সিলর পদ ছেড়ে ফের নির্বাচনে লড়াই করা উচিত বলে এ দিন জানিয়েছেন সাংবাদিক বৈঠকে হাজির দলের জোনাল সম্পাদক অনিতবরণ মণ্ডল, জেলা কমিটির সদস্য কালী নায়েক, মনোজ ধর, জোনাল সদস্য অনিল দাস প্রমুখ। যদিও সরিতা এই প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
গত ২১ জুলাই কলকাতায় গিয়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন প্রাক্তন পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডে-সহ কংগ্রেসের পাঁচ কাউন্সিলর। তারপর তড়িঘড়ি বৈঠক ডেকে কংগ্রেস নেতৃত্ব জানিয়েছিলেন, তাঁদের বাকি ছ’জন কাউন্সিলর দলবদল করবেন না। সিপিএম নেতৃত্বও তখন সাংবাদিক বৈঠক করে একই দাবি করেছিলেন। সেই বৈঠকে হাজির সরিতাই অবশ্য গত ১৮ অগস্ট সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। অস্বস্তি বাড়ে সিপিএম শিবিরের। তবে এ দিন সিপিএমের জোনাল সম্পাদক অনিতবরণ মণ্ডল বলেন, “কাউন্সিলরদের দলত্যাগ মানুষ ভাল ভাবে নিচ্ছে না। আমাদের প্রতীকে আস্থা রেখে মানুষ সরিতা ঝাঁ-কে জয়ী করেছিল। তিনি জনগণের রায়ের মর্যাদা দিতে পারেননি। আমরা দলবদল করা কাউন্সিলরের পদ ছেড়ে দেওয়ার দাবি করছি। ক্ষমতা থাকলে তিনি নতুন করে ভোটে লড়াই করুন।”
শহরে গুঞ্জন সিপিএমের আরও এক কাউন্সিলর দলবদল করতে চলেছেন। যদিও অনিতবরণবাবু বলেন, “তৃণমূল যে প্রচার চালাচ্ছে তা মিথ্যা। আমি বা আমাদের আর কোনও কাউন্সিলর দলবদল করছি না।” কিন্তু আগেও তো এমন দাবি করেছিলেন। তার পরেও সরিতা দল ছেড়েছেন। এ বার জোনাল সম্পাদকের জবাব, “সরিতা ঝাঁ আমাদের দলের সদস্য নন, সাধারণ সমর্থক ছিলেন। কিন্তু বাকি কাউন্সিলরেরা দলের সদস্য। তাই দলবদলের সম্ভাবনা নেই।” জেলা নেতা কালী নায়েকের আবার মত, “কাউন্সিলর ভাঙানোর এই খেলা তৃণমূলের দেউলিয়া রাজনীতির পরিচয়।”
এ দিন খড়্গপুর পুরসভার বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ এনেছে সিপিএম। তাদের দাবি, রেলের এলাকায় রেল কাজ করে। পুরসভা কাজ করতে গেলে বাধা আসছে। অথচ সেখানে পুরসভা টাকা বরাদ্দ করছে। এ ভাবে টাকা নয়ছয় করা হচ্ছে। রেল এলাকায় বস্তিবাসীদের বিদ্যুৎ সরবরাহে পুরসভা উদাসীন বলেও অভিযোগ। সিপিএম জোনাল সদস্য অনিল দাস বলেন, “বিদ্যুৎ সরবরাহে বাধা দেওয়ায় রেলের বিরুদ্ধে বিগত বোর্ডে যে মামলা হয়েছিল, সেই মামলা নিয়ে উদাসীন বর্তমান পুরপ্রধান। তিনি নিজের রেল ওয়ার্ডে দলীয় কার্যালয় ও পার্ক তৈরি করে রেলের বিদ্যুৎ চুরি করেছেন। তাই রেল আধিকারিকদের সঙ্গে যোগসাজশ করে মামলা
শিথিল করেছেন।”