ফের ভাঙন সিপিএমে, কাউন্সিলরের দলবদল

তৃণমূলের উদ্যোগে প্রয়াত সিপিআই সাংসদের ছেলের স্মরণসভা। আর সেই সভাতেই দলবদল করলেন এক সিপিএম কাউন্সিলর।রবিবার খড়্গপুরের মালঞ্চ টাটাব্যাঙ্ক এলাকায় প্রয়াত সিপিআই সাংসদ নারায়ণ চৌবের বড় ছেলে নিহত গৌতম চৌবের স্মরণে সভার আয়োজন করেছিল তৃণমূল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share:

তৃণমূলের উদ্যোগে প্রয়াত সিপিআই সাংসদের ছেলের স্মরণসভা। আর সেই সভাতেই দলবদল করলেন এক সিপিএম কাউন্সিলর।

Advertisement

রবিবার খড়্গপুরের মালঞ্চ টাটাব্যাঙ্ক এলাকায় প্রয়াত সিপিআই সাংসদ নারায়ণ চৌবের বড় ছেলে নিহত গৌতম চৌবের স্মরণে সভার আয়োজন করেছিল তৃণমূল। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ওই টাটাব্যাঙ্কের কাছেই দুষ্কৃতীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা গৌতম চৌবে। প্রতিবারই দিনটি পালন করে তৃণমূল। এ বার অবশ্য আয়োজনের ঘটা ছিল একটু বেশিই। এ দিন ওই স্মরণসভাতেই খড়্গপুরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শ্যামল রায় সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। এর ফলে, গত পুর-নির্বাচনে ১১টি আসনে জয়ী তৃণমূলের কাউন্সিলর সংখ্যা বেড়ে হল ২৫। ৩৫ আসনের এই পুরসভায় বিজেপির ৫ জন, কংগ্রেসের ৫ জন, সিপিআইয়ের ২ জন ও সিপিএমের ২ জন দলবদল করে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এ দিনের দলবদলের ফলে ৩৫ আসনের খড়্গপুর পুরসভায় তৃণমূলের কাউন্সিলর হল ২৫। কংগ্রেসের ৬, বিজেপির ২, সিপিএমের ১ ও সিপিআইয়ের ১ জন কাউন্সিলর রয়েছেন।

খড়্গপুর পুরভোটের পর থেকেই একের পর এক বিরোধী কাউন্সিলরকে দলে টেনেছে তৃণমূল। গোড়া থেকেই শাসকদলের এই প্রবণতার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন সিপিএম নেতৃত্ব। শুধু তাই নয়, দলীয় প্রতীকে জেতা কাউন্সিলরদের পাশে বসিয়ে সিপিএম নেতৃত্ব বারবার সাংবাদিক সম্মেলন করে এ-ও জানিয়েছিলেন যে তাঁদের আর কেউ দলত্যাগ করবেন না। গত ৮ অগস্ট সাংবাদিক বৈঠকে সিপিএমের শহর জোনাল সম্পাদকের পাশেই দেখা গিয়েছিল দলীয় কাউন্সিলর শ্যামল রায়, সরিতা ঝাঁকে। তারপরেই ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সরিতা ঝাঁ সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। ফের গত ৩ সেপ্টেম্বর সাংবাদিক বৈঠক ডেকে আর কেউ দলত্যাগ করছেন না বলে দাবি করে সিপিএম। তা সত্ত্বেও এ দিন শ্যামলবাবু দলত্যাগ করায় সিপিএমের মুখ পুড়ল বলেই জেলা রাজনীতির পর্বেক্ষকদের ধারণা। যদিও এ দিন সিপিএমের শহর জোনাল সম্পাদক অনিতবরণ মণ্ডল বলেন, “বাংলায় একটা বিকৃত রাজনীতি চালাচ্ছে তৃণমূল। তাই সুবিধাবাদী রাজনীতির কাছে আমাদের হার মানতে হচ্ছে। প্রলোভনের কাছে মাথা নত করছে সুবিধাবাদীরা। আমাদের দাবি, ক্ষমতা থাকলে ওই মতাদর্শহীন কাউন্সিলরেরা পদত্যাগ করুন।”

Advertisement

কিন্তু কেন দলত্যাগ করলেন শ্যামলবাবু? তাঁর ব্যাখ্যা, “সিপিএমে থেকে কাজ করতে পারছিলাম না। উন্নয়নে পিছিয়ে পড়ছিলাম। পাশে দলের লোকজন পাচ্ছিলাম না। তাই উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে তৃণমূলে এলাম।’’

তবে কি তৃণমূল পরিচালিত খড়্গপুর পুরসভা বিরোধী কাউন্সিলরদের কাজের ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করছে?। পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারের দাবি, “সিপিএমে থেকে দমবন্ধ হয়ে যাচ্ছিল শ্যামল রায়ের মতো কাউন্সিলরদের। আমরা উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ করলেও কাউন্সিলরকে চাপ দিয়ে সিপিএম নেতারা সেই টাকা আত্মসাৎ করার চক্রান্ত করছিলেন। তাই সিপিএম কাউন্সিলরা স্বেচ্ছায় আমাদের দলে আসছেন।”

তবে এ ভাবে বিরোধী ভাঙানোর খেলায় গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলেই মনে করছেন শহরবাসী। তাঁদের প্রশ্ন, বিরোধী স্বর না থাকলে পুরবোর্ডে সমস্যা উত্থাপন হবে কী করে? যদিও এ প্রসঙ্গে সদ্য কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে আসা শহরের প্রাক্তন পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডের বক্তব্য, “বিরোধিতা করার জন্য সংবাদমাধ্যম আছে তো!”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement