প্রতীকী ছবি।
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আগেই দ্রুত টিকাকরণে জোর দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। যদিও চাহিদার তুলনায় টিকার সরবরাহ কম থাকায় টিকা পেতে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে মানুষকে রাত জেগে লাইনে দাঁড়িয়ে কুপন সংগ্রহ করতে হচ্ছে। তার জন্য সাধারণ মানুষের হয়রানির শেষ নেই। মানুষের এই হয়রানি বন্ধ করতে এ বার টিকার শিবিরের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি ‘কুপন’ বিলি বন্ধ করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম দফায় করোনা যোদ্ধাদের টিকাকরণে জোর দেওয়া হয়েছিল। এরপর ধাপে ধাপে ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বে এবং ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে করোনার ‘সুপার স্প্রেডার’দের টিকাকরণে জোর দেওয়া হয়েছে। করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার সতর্কতা থাকায় ১২ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুর মায়েদের টিকাকরণেও জোর দেওয়া হয়েছে। ১৮ ঊর্ধ্বদের সকলকে টিকা দেওয়ার ঘোষণা করা হলেও চাহিদা অনুযায়ী টিকার জোগান না থাকায় সকলকে প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া যায়নি। তবে বর্তমানে টিকার জোগান আগের চেয়ে বেড়েছে।
জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, বর্তমানে পূর্ব মেদিনীপুরে প্রথম ডোজের টিকা পেয়েছেন প্রায় ১৬ লক্ষ বাসিন্দা। যা লক্ষ্যমাত্রার ৩৮ শতাংশ। দ্বিতীয় ডোজের টিকা পেয়েছেন ১১ লক্ষ বাসিন্দা। যা লক্ষ্যমাত্রার ২৪ শতাংশ। এর মধ্যে কাঁথি ও হলদিয়া পুরসভা এলাকায় টিকাকরণের হার বেশি। তুলনায় তমলুক, এগরা ও পাঁশকুড়া পুরসভা পিছিয়ে রয়েছে। এমন অবস্থায় পূর্ব মেদিনীপুরে ১৮ ঊর্ধ্বদের সকলকে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এর জন্য প্রতি এলাকায় বুথের ভোটার তালিকা ধরে টিকা পাওয়া ও টিকা না পাওয়া ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা ওই তালিকা তৈরি করবেন। যেহেতু ১৮ বছর পেরোলেই ভোটার তালিকায় নাম ওঠে আর সমস্ত পুরসভা ও গ্রামীণ এলাকায় বুথ ভিত্তিক ভোটার তালিকা রয়েছে। তাই ভোটার তালিকা ধরেই ১৮ ঊর্ধ্বদের কারা টিকা পেয়েছেন আর কারা পাননি তা চিহ্নিত করা হবে। ওই তালিকা অনুযায়ী টিকা না পাওয়া ব্যক্তিদের তালিকা ধরেই ধাপে ধাপে বাড়ির কাছাকাছি শিবিরে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। স্বাস্থ্যকর্মীরাই ওই ব্যক্তিদের টিকার শিবিরে যাওয়ার দিনক্ষণ আগাম জানিয়ে দেবেন। এর জন্য আর ‘কুপন’ বিলি করা হবে না।
প্রাথমিকভাবে শহর এলাকায় ভোটার তালিকা ধরে ওই তালিকা তৈরি হচ্ছে। তমলুক পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, পুরসভা এলাকায় এখনও পর্যন্ত প্রায় ৬৭ শতাংশ বাসিন্দার প্রথম ডোজের টিকাকরণ হয়েছে। তবে পুরসভার বস্তি এলাকায় টিকাকরণের হার ৯৮ শতাংশ। বর্তমানে ১২ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুর মায়দের ও ‘সুপার স্প্রেডারদের’ টিকাকরণ চলছে। আগামী ৪ সেপ্টেম্বর থেকে ১৮ ঊর্ধ্বদের প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া শুরু হবে। এর জন্য ভোটার তালিকা ধরে স্বাস্থ্যকর্মীরা টিকা প্রাপকদে তালিকা তৈরি করছেন।
পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘জেলায় ১৮ ঊর্ধ্বদের টিকাকরণে জোর দেওয়া হয়েছে। ভোটার তালিকা ধরেই টিকা না পাওয়া ব্যক্তিদের তালিকা তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে। ওই তালিকা ধরে ধাপে ধাপে টিকা দেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে শহর এলাকায় এই পদ্ধতিতে টিকাকরণে জোর দেওয়া হচ্ছে।’’