শিকেয়-স্বাস্থ্যবিধি: মাস্ক ছাড়ায় টিকার লাইনে। রবিবার গড়বেতার ঝাড়বনি বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে। নিজস্ব চিত্র।
এক সময়ে এক মাসেও হয়নি। এখন একদিনেই এক লাখের গণ্ডি পার!
শনিবার, একদিনেই পশ্চিম মেদিনীপুরে ১ লক্ষ ২৩ হাজারেরও বেশি করোনা টিকাকরণ হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত এটাই দৈনিক সর্বাধিক টিকাকরণ। এ রাজ্যের জেলাগুলির মধ্যে ওই দিন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ টিকাকরণ হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। শনিবার জেলায় টিকাকরণে ‘মেগা ক্যাম্প’ হয়েছিল। এ ভাবে টিকাকরণ শুরু হওয়ায় অবশেষে জেলায় গতি পেতে শুরু করেছে টিকাকরণ। আগামী দিনে আরও ‘মেগা ক্যাম্পে’র পরিকল্পনা রয়েছে। ফলে, টিকাকরণে আরও গতি বৃদ্ধির আশাও রয়েছে। আজ, সোমবারও জেলায় ‘মেগা ক্যাম্প’ হওয়ার কথা। জেলায় যে গতিতে টিকা দেওয়ার কাজ চলছে তাতে সন্তুষ্ট চিকিৎসকদের একাংশও।
শহরাঞ্চলে অনেকেই টিকাকরণের আওতায় চলে এসেছেন। এখন গুরুত্ব পাচ্ছে গ্রামাঞ্চলই। জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘এখন ত্বরান্বিত হয়েছে গ্রামাঞ্চলের টিকাদানও।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভুবনচন্দ্র হাঁসদারও বক্তব্য, ‘‘এখন গ্রামেও অনেকই বেড়েছে টিকাকরণ।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এখন দৈনিক ডোজ়ের প্রায় ৮০ শতাংশ ব্যবহৃত হচ্ছে গ্রামে। চলতি মাসে আগেও জেলায় ‘মেগা ক্যাম্প’ হয়েছে। তবে শনিবারের মতো এত টিকাকরণ আগে হয়নি। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, শনিবার জেলায় টিকাকরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লক্ষ ২০ হাজার। লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে টিকাকরণ হয়েছে ১,২৩,৮৮৮।
জানা যাচ্ছে, রাজ্যের নির্দেশেই করোনা টিকাকরণে বিশেষ ‘ড্রাইভ’ নেওয়া হচ্ছে। ‘মেগা ক্যাম্প’ এরই অংশ। শনিবার পর্যন্ত জেলা ৩২,৮৩,৩৮৬ ডোজ় টিকা ব্যবহৃত হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ডোজ় ২৪,৭৪,১৯৭ ও দ্বিতীয় ডোজ় ৮,০৯,১৮৯। অর্থাৎ, টিকার অন্তত একটি ডোজ় পেয়েছেন ২৪,৭৪,১৯৭ জন। তবে জেলার ১৩,৬১,২৩৫ জন এখনও টিকা পাননি। চলতি বছরের মধ্যে সব প্রাপ্তবয়স্ককে টিকাকরণের আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে বলেই জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। স্বাস্থ্যকর্মীরা মনে করছেন, ‘মেগা ক্যাম্প’ চলতে থাকলে দৈনিক টিকাকরণও স্বাভাবিকভাবে বাড়বে।
তবে এখনও কিছু এলাকায় টিকাকরণের গতি কম। কেন? জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘যেখানে মানুষের সচেতনতা কম, সেখানে টিকাকরণের হার কম। ওই সব এলাকায় সচেতনতা বাড়ানোর সব রকম চেষ্টা চলছে।’’ জেলায় বয়স্কদের বেশিরভাগই টিকাকরণের আওতায় চলে এসেছেন বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের দাবি। শনিবার পর্যন্ত জেলায় ৬০ ঊর্ধ্বদের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়েছে টিকার ৬,৭১,৫৭৩ ডোজ়। ৪৫ থেকে ৬০ বছর বয়সির ক্ষেত্রে ১০,৫০,৫৭০ ডোজ় ও ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়েছে ১৫,৬১,২৪৩ ডোজ। জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের আশ্বাস, ‘‘টিকা সরবরাহে ঘাটতি না হলে টিকাকরণের ঊর্ধ্বগতিই থাকবে।’’