এগরা ঝাঁটুলাল হাইস্কুলে স্বাস্থ্য শিবির। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
কলকাতার করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধ এসেছিলেন এগরার বিয়েবাড়িতে। ফলে তাঁর সংস্পর্শে ঠিক কতজন এসেছেন, সেই সংখ্যাটা এখনই বলা কঠিন। অগত্যা মাইকে হেঁকে বিয়েবাড়ির আমন্ত্রিতদের খোঁজ শুরু করল প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার ওই বৃদ্ধের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়ার পরেই এগরা পুরসভা এবং জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। ওই বৃদ্ধের সংস্পর্শে কারা এসেছিলেন বা বিয়েবাড়িতে কারা হাজির ছিলেন সেই তথ্য জোগাড় করছে স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ওই বিয়েবাড়িতে আট শতাধিক লোক এসেছিলেন। ফলে তাঁদের সম্পূর্ণ তালিকা করতে কিছুটা হলেও ধাক্কা খেতে হয়েছে দফতরকে।
এই পরিস্থিতিতে এ দিন এগরা ঝাঁটুলাল হাইস্কুলে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির হয় এবং পুরসভা এলাকায় শুরু হয় মাইকে প্রচার। তাতে বলা হয়, যাঁরা ওই বিয়েতে হাজির ছিলেন, তাঁরা যেন দ্রুত শিবিরে এসে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। এ দিনের শিবিরে ছিলেন এগরার মহকুমাশাসক অপ্রতিম ঘোষ, এসডিপিও শেখ আখতার আলি, পুরপ্রধান শঙ্কর বেরা প্রমুখ।
বিয়েতে বিপদ
হাসপাতালে আইসোলেশন ১৩
হোম কোয়রান্টিন ১২৭
দিঘা ও এগরার হোটেলের কর্মচারীদের আইসোলেশনে
জেলা স্বাস্থ্য দফতর এবং প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই বৃদ্ধ এগরা থেকে দিঘায় ঘুরতে গিয়েছিলেন। তাঁর সংস্পর্শে আসা ১৩ জনকে এগরা সুপার স্পেশ্যালিটিতে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল জানিয়েছেন, তাঁরা এখনও পর্যন্ত ১২৭ জনকে চিহ্নিত করেছেন। তাঁদের হোম কোয়রান্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এগরা এবং দিঘার যে হোটেলে করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধ ছিলেন, সেখানের কর্মচারীদের হোটেলেই কোয়রান্টিনে থাকতে বলা হয়েছে.
এগরার ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর বিদেশ এবং ভিন্ রাজ্য থেকে আসা লোকজনদের উপরে নজরদারি বৃদ্ধি করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ করেছে। ওই সব ব্যক্তিদের ব্লক ও পুরসভা ভিত্তিক তালিকা তৈরি করা হয়েছে। হোম কোয়রান্টিনে থাকা লোকজনদের শারীরিক অবস্থার বিষয়ে নজরদারি করছেন ব্লক ও পুরসভার স্বাস্থ্য কর্মীরা।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, পূর্ব মেদিনীপুরে বিদেশ থেকে ফেরা ৪৫৭ জন ও ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা ১৮ হাজার ১৫২ জন হোম কোয়রান্টিনে রয়েছে। গ্রামীণ এলাকায় স্বাস্থ্য দফতরের আশা কর্মীরা তাঁদের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি সম্পর্কে নিয়মিত রিপোর্ট পাঠাচ্ছেন ব্লক স্বাস্থ দফতর ও প্রশাসনের কাছে। পুরসভা এলাকার পুরসভার স্বাস্থ্য কর্মীরা একইভাবে নজরদারি করছেন।
তমলুক পুরসভা সূত্রে খবর, শহরে মোট ১৮১ জন হোম কোয়রান্টিনে রয়েছেন। এরমধ্যে ১৫ জন বিদেশ থেকে এসেছেন। ১৫৯ জন ভিন্ রাজ্য থেকে এসেছেন। আর বাকিরা অন্য জেলা থেকে এসেছেন। এঁদের মধ্যে ৬০ বছরের ঊর্ধ্বের ব্যক্তিদের আলাদাভাবে তালিকা তৈরি করা হয়েছে। জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘হোম কোয়রান্টিনে থাকা বিদেশ ও ভিন্ রাজ্য থেকে আসা ব্যক্তিদের নিয়মিত নজরদারি করা হচ্ছে।’’