নির্দিষ্ট সময়ের পরেও খোলা রয়েছে একাধিক দোকান। রবিবার তমলুক শহরে। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।
করোনা সংক্রমণে রাশ টানতে মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যত লকডাউন চালু করে রাজ্য সরকার। বাস, লোকাল ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার পাশাপাশি বাজারে দোকানপাট খোলার সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। সংক্রমণের হার কমে যাওয়ায় সেই বিধিনিষেধ শিথিল করে দোকান খোলার সময় কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। অর্ধেক সংখ্যক যাত্রী নিয়ে সরকারি-বেসরকারি বাস চালুর অনুমোদনও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু করোনা সংক্রমণ সে ভাবে না কমায় ভিড় এড়াতে শুধুমাত্র সকালে দোকান খোলা রাখা যাবে বলে সিদ্ধান্ত নিল শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের করোনা সংক্রান্ত টাস্ক ফোর্স কমিটি।
সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী প্রতিদিন সকাল ৬ টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত আনাজ, মাছ, মাংস, ডিম, ফল, মুদি দোকান সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দোকান খোলা রাখা যাবে। সকাল ১১ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত পোশাক, সোনা, ইমারতি সামগ্রীর দোকান ও রেস্তোঁরা খোলা রাখা যাবে। সরকারি এই ঘোষণার ফলে জেলার বিভিন্ন বাজারে সকালে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার জন্য বাসিন্দাদের ভিড় তো আছেই। দেখা যাচ্ছে ১১টার পরেও কেনাকাটা করতে বাজারে ভিড় হচ্ছে।
জেলার বিভিন্ন এলাকায় করোনা সংক্রমণ এখনও অব্যাহত। শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে এখন প্রায় একশো জন করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার জন্য ব্লকে কয়েকটি এলাকা কন্টেনমেন্ট জোন হিসেবে ঘোষিত রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সংক্রমণ রুখতে ব্লকের অন্যতম জনবহুল নোনাকুড়ি, মেচেদা, বুড়ারি, ডিমারি ও রামতারক বাজার সহ শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের সমস্ত বাজার ৫ জুলাই থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিন কেবলমাত্র সকাল ৬ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্লকের করোনা সংক্রান্ত টাস্ক ফোর্স কমিটি। তবে ওষুধ, গ্যাস-সহ জরুরি পরিষেবার দোকান সারাদিন খোলা থাকবে।
রবিবার শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের প্রায় ২০টি বাজার কমিটির সম্পাদক, সভাপতি ও পঞ্চায়েত প্রধানদের নিয়ে বিডিও অফিসে বৈঠক হয়। বৈঠকে ছিলেন বিডিও অমিত গায়েন, পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতি রাজেশ হাজরা ও ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক-সহ ব্লক টাস্ক ফোর্স কমিটির সদস্যরা। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ৫ জুলাই থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত ব্লকের সমস্ত বাজারে কেবল সকাল ৬ টা থেকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত সমস্ত দোকান খোলা রাখা যাবে। নোনাকুড়ি, মেচেদা, বুড়ারি, রামতারক, ডিমারি সহ সব পান বাজারও ওই সময় পর্যন্ত খোলা থাকবে। বাকি সময় দোকানপাট বন্ধ রাখতে হবে। এ বিষয়ে ব্লক প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত থেকে মাইক প্রচার করা হবে।
বিডিও অমিত গায়েন বলেন, ‘‘ব্লকের বিভিন্ন বাজার কমিটি থেকেই আমাদের কাছে প্রস্তাব এসেছিল দিনের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দোকানপাট খোলা রাখার পরিবর্তে দিনে একটি নির্দিষ্ট সময় সব দোকান খোলা রাখার জন্য। ব্লকের টাস্ক ফোর্সের বৈঠকে সংক্রমণ আরও কমানোর লক্ষ্যে সমস্ত বাজারে সকাল ৬ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাকি সময় দোকানপাট বন্ধ থাকবে।’’