প্রশাসনের ডাকা শুনানিতে যেতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল শাসক দলের এক নেতার বিরুদ্ধে। বুধবার সবং ব্লক ভূমি ও ভূমি রাজস্ব কার্যালয়ে বলপাই গ্রাম পঞ্চায়েতের খাগরাগেড়িয়া গ্রামের একটি বর্গা জমি সংক্রান্ত শুনানি ছিল। সিপিএমের অভিযোগ, সেই শুনানিতে যোগ দিতে যাওয়ার সময় চাষিদের মারধর করে সরিয়ে দেন সবংয়ের তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদ কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতির অনুগামীরা। ওই বর্গা চাষিরা এ বিষয়ে থানায় অভিযোগও জানিয়েছেন। কিন্তু ব্লক ভূমি রাজস্ব আধিকারিক সঞ্জয় বিশ্বাস বলেন, “আদালতের নির্দেশ মেনে শুনানি ডাকা হয়েছিল। দু’পক্ষই উপস্থিত ছিল। বাইরে কোনও গোলমাল হয়েছে কি না জানা নেই। শুনানির রিপোর্ট আদালতে জানাব।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাম জমানায় সবংয়ের বিভিন্ন এলাকায় জমি বর্গা করে চাষিদের দেওয়া হয়েছিল। সেই সময়েই ওই খাগরাগেড়িয়া গ্রামেও ছয় একর জমি বাম সমর্থিত চাষিদের দেওয়া হয়। ক্ষমতায় আসার পরে সবংয়ের তৃণমূল নেতা অমূল্য মাইতি নিজেকে ওই জমির মালিক বলে দাবি করেন। জমি ফিরে পেতে আদালতের দ্বারস্থ হন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতেই আদালত স্থানীয় ভূমি দফতরকে জমির সংক্রান্ত তদন্ত করতে নির্দেশ দেয়। এ দিন শুনানির ডাক দিয়েছিলেন ব্লক ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিক। সেই শুনানিতে বাদী ও বিবাদী পক্ষের লোকেদের থাকার কথা ছিল। কিন্তু অভিযোগ, শুনানিতে যাওয়ার পথে অধিকাংশ চাষিকে মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। সিপিএমের প্রাক্তন জোনাল সম্পাদক তথা জেলা কমিটি সদস্য অমলেশ বসু বলেন, “দীর্ঘদিন আগে ওই জমি বর্গা হয়েছিল সেখানে স্থানীয় কৃষকেরা চাষাবাদ করে সংসার চালাচ্ছে। এখন অমূল্য মাইতি নিজের প্রশাসনিক প্রভাব খাটিয়ে চাষিদের জমি থেকে উচ্ছেদ করতে চাইছে।” তাঁর অভিযোগ চাষিদের মেরে তাড়িয়ে দেওয়ার খবর জানাতে ভূমি দফতরে গেলে তাঁকে ও জোনাল সম্পাদক চন্দন গুছাইতকেও বাধা দেওয়া হয়।
অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূল নেতা অমূল্য মাইতি বলেন, “আমার জমি বাম আমলে জোর করে দখল করা হয়েছিল। আদালতের নির্দেশে সেই সংক্রান্ত শুনানি চলাকালীন অমলেশবাবুরা জোর করে ওই ঘরে ঢুকতে চান। কিন্তু সেখানে তো শুধু বাদী ও বিবাদীর থাকার কথা। সে কথা বলায় নিজেরাই বেরিয়ে যান। শুনানি শেষে ভূমি আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করেন।”