পেল্লায়: নারানপুরে রথীন মাহাতোর বাড়ি। নিজস্ব চিত্র
নিজের মস্ত দোতলা পাকা বাড়ি। তারপরেও সরকারি প্রকল্পে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির মায়ের নামে বরাদ্দ হয়েছে বাড়ি!
বেলপাহাড়ির শিলদা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় গত জানুয়ারি মাসে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি রথীন মাহাতোর মা সঞ্জু মাহাতোর নামে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি বরাদ্দ হয়। কয়েক দিন আগে সঞ্জুদেবীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বাড়ি তৈরির প্রথম কিস্তির ৪৫ হাজার টাকা ঢুকেও গিয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনায় প্রকৃত গরিবদের বাদ দিয়ে শাসকদলের নেতাদের পরিবার পরিজনদের বাড়ি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন একাংশ বাসিন্দা।
শিলদার অদূরে নারানপুরে দোতলা পাকা বাড়ি আছে রথীনবাবুর। তাঁর আদি বাড়ি স্থানীয় জামদা এলাকায়। শিলদা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান হরেন্দ্রনাথ মাহাতো হলেন রথীনবাবুর কাকা। অভিযোগ, সেই কারণেই উপভোক্তা তালিকায় ৫৩৬ নম্বরে সঞ্জুদেবীর নাম থাকলেও তিনি বাড়ি তৈরির জন্য প্রথম কিস্তির টাকা পেয়ে গিয়েছেন। এক্ষেত্রে তালিকায় আগে যাঁদের নাম রয়েছে সেই সব প্রাপকদের টপকে সঞ্জু দেবীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রকল্পের টাকা ঢুকে গিয়েছে বলেও অভিযোগ।
বাড়ি পাওয়ার কথা স্বীকারও করছেন রথীনবাবু। তাঁর সাফাই, ‘‘আমি ব্যবসা করে দোতলা বাড়ি করেছি। জামদায় আমার মা আলাদা থাকেন। তাই মা পঞ্চায়েতে আবেদন করে বাড়ি তৈরির টাকা পেয়েছেন। আমাকে বদনাম করার জন্য বিরোধীরা কুৎসা প্রচার করছে।’’ যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, রথীনবাবুর ছেলে সঞ্জু মাহাতো ছেলের কাছেই থাকেন। এখন শোরগোল ওঠায় রথীনবাবু তাঁকে জামদার বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: সাপের ভয়ে সিঁটিয়ে থাকে শিক্ষিকা-পড়ুয়া
বিজেপির ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী বলেন, ‘‘তৃণমূলের নেতারা নিজেদের উন্নয়ন করছেন। এই ঘটনা ফের প্রমাণ করল।’’ পঞ্চায়েত ভোটে শিলদা গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের আশানুরূপ ফল হয়নি। দলের এক সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত স্তরে শাসক দলের একাংশ জনপ্রতিনিধির স্বজন পোষণ ও সীমাহীন দুর্নীতির কারণে এ বার জঙ্গলমহলে খারাপ ফল হয়েছে বলেও অন্তর্তদন্তে উঠে এসেছে। তারপর ফের অনিয়মের অভিযোগ ঘিরে অস্বস্তিতে শাসকদল। বেলপাহাড়ি ব্লক তৃণমূলের সভাপতি চিন্ময় মাহাতো বলছেন, ‘‘এ রকম হয়ে থাকলে সেটা ঠিক হয়নি। রথীনবাবুর উচিত প্রকল্পের টাকা সরকারকে ফিরিয়ে দেওয়া।’’
রথীনবাবু ও তাঁর কাকা বিদায়ী প্রধান হরেন্দ্রনাথ মাহাতোর সম্পর্কের বিষয়টি উল্লেখ করে এ ব্যাপারে একাংশ এলাকাবাসী ও বিজেপির শিলদা মণ্ডলের নেতৃত্বের পক্ষ থেকে বিডিও র কাছে গত শুক্রবার লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। বেলপাহাড়ির বিডিও বরেন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’