Money Laundering

শৌচালয়ের বরাদ্দ লোপাট!

ভারত সরকারের স্বচ্ছ ভারত মিশন প্রকল্পে প্রতিটি পরিবারে শৌচালয় নির্মাণের পরিকল্পনা মত কাজ শুরু হয়েছে। পঞ্চায়েতে সেই মতো তালিকাভুক্ত পরিবারগুলির জন্য অর্থ বরাদ্দ করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

এগরা শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২২ ০৮:৫২
Share:

প্রতীকী ছবি।

গ্রাম সংসদ সভায় প্রকাশ্যে এল তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতে কয়েক লক্ষ টাকার দুর্নীতির অভিযোগ। স্বচ্ছ ভারত মিশন প্রকল্পে শৌচালয় তৈরি না করেও উপভোক্তাদের নামে বরাদ্দ কয়েক লক্ষ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি। শৌচালয় নির্মাণের বরাদ্দ টাকার নয়ছয়ের তদন্তের দাবিতে উপভোক্তারা বিডিও এবং পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। যদিও প্রধানের দাবি অভিযোগ এলে তদন্ত করে দেখা হবে।

Advertisement

ভারত সরকারের স্বচ্ছ ভারত মিশন প্রকল্পে প্রতিটি পরিবারে শৌচালয় নির্মাণের পরিকল্পনা মত কাজ শুরু হয়েছে। পঞ্চায়েতে সেই মতো তালিকাভুক্ত পরিবারগুলির জন্য অর্থ বরাদ্দ করে। ঠিকাদার সংস্থাগুলিকে সেই শৌচালয় তৈরির বরাত দেওয়া হয়। একটি শৌচালয় নির্মাণের জন্য ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। উপভোক্তাকে বাকি এক হাজার টাকা দিতে হয়। এগরা-২ ব্লকে তৃণমূল পরিচালিত মঞ্জুশ্রী গ্রাম পঞ্চায়েতে ২০১৯-’২০ আর্থিক বর্ষে নতুন প্রায় পাঁচশোটি শৌচালয় তৈরির জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল। প্রথম দিকে শৌচালয়গুলি তৈরির জন্য পঞ্চায়েত ঠিকাদার সংস্থা নিতে চায়নি। পরে বারানিধি এলাকায় একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর হাত ঘুরে একটি ঠিকাদার সংস্থা শৌচালয় নির্মাণের বরাত পায় বলে দাবি। অভিযোগ সেই প্রকল্পে অধিকাংশ শৌচালয়ের নির্মাণ হয়নি। অন্যের শৌচালয়ের ছবি দেখিয়ে পঞ্চায়েতে থেকে কয়েক লক্ষ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।

দুর্নীতি বিষয়টি এতদিন গোপনে ছিল। গত ১৭ নভেম্বর ভাটদায় গ্রাম সংসদের সভায় পঞ্চায়েত থেকে শৌচালয় দেওয়ার কথা শুনে হতবাক হয়ে যায় তালিকাভুক্ত পরিবারগুলি। প্রতিবাদে সরব হন এলাকার মানুষ। জানা যায়, তাঁদের নামে বরাদ্দ শৌচালয়ের টাকা ঠিকাদার সংস্থা তুলে নিয়েছে। ভাটদা বুথে বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্য রয়েছেন। বিরোধী পঞ্চায়েত সদস্য হওয়ায় আগেই অবহেলার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। অভিযোগ শৌচালয়ের জন্য আগেই নথিভুক্ত অনেকের কাছ থেকে এক হাজার টাকা নিয়েছিলেন পঞ্চায়েত সদস্য। যদিও সেই টাকা পরে ফেরত দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরে ভাটদা গ্রামে একাধিক ব্যক্তি তাঁদের শৌচালয়ের নথিভুক্ত আইডি নম্বর সহ বিডিও এবং পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে দুর্নীতির অভিযোগ জানান। সেখানে তাঁদের নামে বরাদ্দ শৌচালয় অবিলম্বে তৈরির দাবি জানানো হয়েছে। যদিও পুরো ঘটনায় মুখে কুলুপ এঁটেছেন বিডিও থেকে পঞ্চায়েত সমিতির কর্তারায়

Advertisement

আবেদনকারী হরেকৃষ্ণ সাউ বলেন, ‘‘গ্রাম সংসদের সভায় জানানো হয় আমাকে শৌচালয় তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। অথচ আমার বাড়িতে কোনও শৌচালয় তৈরি হয়নি। বরাদ্দ শৌচালয়ের টাকা অন্য কেউ তুলে নিয়েছে। তদন্ত চেয়ে বিডিও এবং প্রধানের কাছে আবেদন জানিয়েছি।’’

মঞ্জুশ্রী পঞ্চায়েতের প্রধান পূর্ণিমা মাইতি বলেন, ‘‘শৌচালয় তৈরি না করে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অনেকে গ্রাম সংসদ সভায় বলেছিলেন। আমরা তাঁদের অভিযোগ জানাতে বলেছি। অভিযোগ এলই তদন্ত করে দেখা হবে। সেই সময়ে শৌচালয় তৈরির টাকা একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দেওয়া হয়েছিল।’’ এই বিষয়ে এগরা-২ ব্লকের বিডিও কৌশিশ রায়কে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। মেসেজেরও উত্তর দেননি।

কাঁথি সাংগঠনিক জেলা বিজেপি সভাপতি সুদাম পণ্ডিত বলেন, ‘‘তৃণমূল সরকারি প্রকল্পের টাকা চুরি করবে এটা তো ধ্রুবসত্য। উপযুক্ত তদন্ত করে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement