তৃণমূলের মঞ্চ খোলার অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে। নিজস্ব চিত্র।
‘হার্মাদ মুক্তি দিবস’ পালনে খেজুরি রয়েছে তৃণমূলের কর্মসূচি। সেই কর্মসূচি ঘিরে উত্তেজনা। তৃণমূলের প্রচার গাড়িকে বাধা দেওয়ার পাশাপাশি। সভা মঞ্চ খুলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। ঘটনার পাল্টা হিসাবে এক বিজেপি কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
২০১০ সালের ২৪ নভেম্বর খেজুরিতে এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে তৃণমূল এবং সিপিএমের মধ্যে তুমুল অশান্তি হয়। ব্যাপক গোলাগুলি চলে। বোমাবাজিও হয়। ওই ঘটনার পর প্রতি বছর 'হার্মাদ মুক্তি দিবস' হিসেবে পালন করেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এবার খেজুরি-১ ব্লকের বাঁশগোড়া বাজারে সভার আয়োজন করেছে তৃণমূল। ওই কর্মসূচিতে তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তন্ময় ঘোষ, জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক এবং তৃণমূলের ছাত্র পরিষদ নেত্রী রাজন্যা হালদারের হাজির থাকার কথা। ওই কর্সমূচির জন্য গাড়িতে প্রচার শুরু করে দিয়েছেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা। বৃহস্পতিবার বিকেলে তৃণমূলের এমনই একটি প্রচার গাড়িকে আটকে বিজেপির স্থানীয় কর্মীরা বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, রবিন মান্না নামে এক বিজেপি কর্মীকে উদ্দেশ্য করে প্রচার গাড়ি থেকে নানা রকম কটূক্তি করা হচ্ছিল।
বিক্ষোভের সময় প্রচার গাড়িতে থাকা দেবাশিস পন্ডা নামে এক তৃণমূল কর্মীর জামাপ্যান্ট ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তিনি স্থানীয় কামারদা অঞ্চল তৃণমূলের আহ্বায়ক। পাল্টা রবীনকেও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এরপর ফের বাঁশগোড়া বাজারে তৃণমূল এবং বিজেপি কর্মীদের মধ্যে বচসা শুরু হয়ে যায়। এরপ পরে বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তৃণমূলের তরফে যে সভা মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল, তা খুলে দেওয়া হয়েছে। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি তাপস কুমার দোলুই বলছেন, ‘‘শুক্রবার দলের কর্মসূচি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে ওরা যেখানে সভা করছে, সেখানে বাজার কমিটির অনুমতি নেয়নি। ওই কমিটির সঙ্গে বিজেপি কার্যকর্তারা জড়িত। এদিন তাঁদের কটূক্তি করা হয় এবং মারধর করেছে শাসক দলের লোকজন।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক বলেন, ‘‘মানুষ ভুল বুঝতে পেরে তৃণমূলে ফিরতে চাইছে। তারা যাতে যোগ দিতে না পারে, সে জন্য সভা বানচাল করার চক্রান্ত করছে বিজেপি।’’
প্রসঙ্গত, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে আগে তৃণমূলের ওই হার্মাদ মুক্তি দিবস কর্মসূচি চলত। শুভেন্দুর দলবদলের পরে ২০২১ সাল থেকে বিজেপির উদ্যোগে গণতন্ত্র রক্ষার দাবিতে ওই দিনটি পালন করা হয়। এ বছর গেরুয়া শিবিরের তরফে তেমন কোনও কর্মসূচি এখনও ঘোষণা করা হয়নি। তবে, স্থানীয় সূত্রের খবর, শুক্রবার খেজুরির ধোবাপুকুর থেকে কামারদা পর্যন্ত পদযাত্রা এবং পথসভা আয়োজন করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। প্রথমে ঠিক না থাকলেও পরে সকাল ১০টায় ওই কর্মসূচিতে হাজির থাকার কথার সম্ভাবনা জানিয়েছেন শুভেন্দু। এদিন অশান্তির পর এলাকায় যায় বিরাট পুলিশ বাহিনী। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কাঁথির এসডিপিও সোমনাথ সাহা বলেন, ‘‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি।’’