প্রতীকী ছবি
আমপানে ক্ষতিপূরণের তালিকা নিয়ে জলঘোলা হয়েছে বিস্তর। অনিয়ম সংক্রান্ত ভুরি ভুরি অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের নেতা-নেত্রীদের বিরুদ্ধে। পঞ্চায়েত থেকে ব্লক, জেলা স্তরের বিভিন্ন নেতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ এলাকার মানুষের। যার পরিণতিতে ইতিমধ্যেই তৃণমূল নেতৃত্বের পক্ষ থেকে নন্দীগ্রামের ১৮৮ জনকে শো-কজ এবং ২৫ জনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তবুও তালিকা নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। যার প্রমাণ, ক্ষতিপূরণের তালিকায় নাম উঠলেও এখনও ক্ষতিপূরণ পাননি নন্দীগ্রামের বাসিন্দা মৃত্যুঞ্জয় পাত্র।
আমপানের তাণ্ডবে ভালরকম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল মাটির ঘর। তাই রাজ্য সরকার ক্ষতিপূরণ দেবে শুনে আশায় বুক বেঁধেছিলেন নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের আমদাবাদ-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের আমদাবাদ গ্রামের বাসিন্দা মৃত্যুঞ্জয়। জানালেন, কোনওরকম ত্রাণ এমনকী একটা ত্রিপলও আজ পর্যন্ত জোটেনি। পরিবারে ৮ জন সদস্য। কোনওরকমে সংসার চলে। ভেবেছিলেন ক্ষতিপূরণের টাকায় ঘর সারাবেন। কিন্তু পঞ্চায়েত থেকে তৈরি আমপানের ক্ষতিপূরণ প্রাপকের তালিকায় আর নাম ওঠেনি মৃত্যুঞ্জয়ের। নিরুপায় হয়ে ক্ষতিপূরণের জন্য বিডিও অফিসে আবেদন করেন। এ বার নাম ওঠে। কিন্তু ইতিমধ্যে লাগাতার বৃষ্টির দাপটে ঘর একেবারে ভেঙে যাওয়ায় এখন ভিটে ছেড়ে পরিবার নিয়ে পড়শির বাড়িতে ঠাঁই নিতে হয়েছে মৃত্যুঞ্জয়কে।
মৃত্যুঞ্জয়ের ছেলে পলাশ বলেন, ‘‘বিডিও অফিসে আবেদের পরেও আজ পর্যন্ত কোনও ক্ষতিপূরণ মেলেনি। একটা ত্রিপল দেয়নি কেউ। নিজের পয়সায় ত্রিপল কিনে ছাউনি করে কোনওরকমে দিন কাটছিল। কিন্তু কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ঘরের প্রায় পুরোটাই ধসে পড়ে। প্রাণ বাঁচাতে তাই অন্যের বাড়িতে ঠাঁই নিয়েছি।’’
বিজেপির নন্দীগ্রাম-২ দক্ষিণ মণ্ডল সভাপতি অরূপ জানা বলেনয় ‘‘মৃত্যুঞ্জয়বাবু গরিব মানুষ। কাটমানি দিতে পারবেন না। তাই তৃণমূল নেতারা এই সব মানুষদের চোখে দেখতে পাননি। যাঁদের পাকা বাড়ি ছিল তাঁদের কপালে ক্ষতিপূরণ জুটেছে।’’
কেন ক্ষতিপূরণ পেলেন না মৃত্যুঞ্জয়? আমদাবাদ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অনিমা ভুঁইয়া বলেন, ‘‘মৃত্যুঞ্জয়বাবুর ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় নাম আছে। নিশ্চয়ই ক্ষতিপূরণ পাবেন।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমি নিজে ত্রিপল দিয়েছি। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা নিয়ে অভিযোগ ভিত্তিহীন।’