—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
শিয়ালদহের পরে এ বার বিপর্যস্ত হতে চলেছে হাওড়া-খড়্গপুর শাখায় ট্রেন চলাচল। সব মিলিয়ে ১০দিনের কাজে দূরপাল্লার ৩২জোড়া ট্রেনের সঙ্গে বাতিল হতে চলেছে প্রায় ১৬৬টি লোকাল।
এই সংক্রান্ত খসড়া নির্দেশিকা দিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের অপারেটিং বিভাগ। ওই নির্দেশিকা ডেপুটি চিফ অপারেশন ম্যানেজার চূড়ান্ত করার জন্য খড়্গপুর ডিভিশনে পাঠিয়েছেন। খড়্গপুর রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার অলোক কৃষ্ণা বলেন, “আন্দুল স্টেশনের কাছে নন-ইন্টারলকিংয়ের কাজ হতে চলেছে। তার জন্য ‘ব্লক’ নিতে হবে। তাতে ট্রেন চলাচল কয়েকদিনের জন্য বিপর্যস্ত হতে পারে। যে নির্দেশিকাটি সামনে এসেছে প্রাথমিকভাবে সেই তালিকা অনুযায়ী ট্রেন বাতিল হবে বলে ঠিক হয়েছে। আমরা পরে বিষয়টি প্রেস বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেব।”
ওই খসড়া তালিকা অনুযায়ী, ২২ জুন থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত টানা ১০দিন চলতে পারে কাজ। ২৮ জুন থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত চলতে পারে নন-ইন্টারলকিংয়ের মূল কাজ। তার আগে ২২ থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত চলতে পারে প্রি-ইন্টারলকিং। এর জেরে ২২ জুন থেকেই হাওড়া-মেদিনীপুর, হাওড়া-খড়্গপুর, হাওড়া-পাঁশকুড়া, হাওড়া-আমতা, পাঁশকুড়া-দিঘা, হাওড়া-মেচেদা-সহ খড়্গপুর ডিভিশনের বিভিন্ন রুটে লোকাল ট্রেন চলাচল বাতিল হতে পারে। তবে সবচেয়ে প্রভাব পড়বে শেষ চারদিন।
জানা যাচ্ছে, ২৮-২৯ জুন ৪৫টি লোকাল ট্রেন, ২৯-৩০জুন ৪৪টি লোকাল ট্রেন ও ১জুলাই ৪৫টি লোকাল ট্রেন বাতিল করা হতে পারে। সেই সঙ্গে হাওড়া-দিঘা তাম্রলিপ্ত, হাওড়া-ভুবনেশ্বর জনশতাব্দী, হাওড়া-পুরুলিয়া এক্সপ্রেস, শালিমার-পুরী ধৌলি, হাওড়া-টিতলাগড় ইস্পাত এক্সপ্রেস, হাওড়া-পুরী শতাব্দী, হাওড়া-টাটানগর স্টিল, লোকমান্যতিলক-শালিমার এক্সপ্রেস, পুনে-হাওড়া আজাদহিন্দ, হাওরা-মুম্বাই জ্ঞানেশ্বরী, পুরী-শিয়ালদহ দুরন্ত-সহ ৩২জোড়া এক্সপ্রেস ট্রেন বাতিল হতে চলেছে।
এ ছাড়াও গুয়াহাটি-বেঙ্গালুরু, শিলচর-তিরুঅনন্তপুরম, ডিব্রুগড়-কন্যাকুমারী-সহ ১১টি দূরপাল্লার ট্রেনের যাত্রাপথ বদল করে আসানসোল-আদ্রা হয়ে চালানো হতে পারে। বিভিন্ন দিনে সময়সূচি বদলানো হতে পারে ৮টি ট্রেনের। বাঘাযতীন, রানি শিরোমণি, শালিমার-ভাজপুর এক্সপ্রেসের যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করে খড়্গপুর পর্যন্ত চালানো হতে পারে বলে খসড়া নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে।
ট্রেন বাতিলের খসড়া তালিকা ইতিমধ্যে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছে। তাতে শোরগোল পড়েছে। দুর্ভোগের আশঙ্কা করছেন নিত্যযাত্রীরা। খড়্গপুর-হাওড়া-মেদিনীপুর ডেইলি প্যাসেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক জয় দত্ত বলেন, “বাস্তবে আমরা যাত্রীরা উপকৃত হতে পারছি না। আমাদের তো সেই হাওড়া পৌঁছতেই ট্রেনের দেরিতে ৪ ঘন্টা লেগে যাচ্ছে। যে নির্দেশিকা সমাজমাধ্যমে আমরা দেখেছি তাতে ১০দিন ধরে এই কাজ হলে ১৬৬টি লোকাল ট্রেন বাতিল হবে। এই গরমে নাকাল হবেন নিত্যযাত্রী থেকে সাধারণ যাত্রীরা। রেলের উচিত ছুটির দিন, রাতের দিকে করে এই কাজ করা।” সব দিক দেখেই বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছে খড়্গপুর রেল ডিভিশন।