অঙ্গনওয়াড়িতে অন্নপ্রাশন, পায়েসে মিষ্টিমুখ একদল একরত্তির

কোলাঘাটের পুলশিটা এলাকার পয়াগ গ্রামের নাটমণ্ডপে শুক্রবার সকালে ছিল সাজো-সাজো রব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোলাঘাট শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৯ ০০:২১
Share:

এক শিশুকে পায়েস খাইয়ে দিচ্ছেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী অনিতা প্রামাণিক। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

প্রথমে অনিচ্ছায় মুখ ঘুরিয়ে নেওয়া। কিন্তু জিভে পায়েসের চামচটা লাগতেই তা চেখে দেখতে নড়েচড়ে বসল একরত্তি শিশুটা। তা দেখে আশেপাশে ভিড় করে দাঁড়ানো অন্য খুদেদের মুখে সে কী হাসি!

Advertisement

কোলাঘাটের পুলশিটা এলাকার পয়াগ গ্রামের নাটমণ্ডপে শুক্রবার সকালে ছিল সাজো-সাজো রব। এ দিন এখানেই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের তরফে ১০টি শিশুর অন্নপ্রাশনের অনুষ্ঠান হয়। কেন্দ্রের নিজস্ব ভবন নেই। আর পাঁচটা দিন গ্রামের ক্লাবেই হয় পঠনপাঠন এবং রান্নার কাজ। কিন্তু অন্নপ্রাশন উপলক্ষে ক্লাবের সামনে থাকা নাটমণ্ডপ এদিন সকাল থেকে রং-বেরঙের বেলুন দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়। শিশুদের নতুন পোশাক পরিয়ে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে হাজির হন বাবা-মায়েরা।

আশাকর্মী অনিতা প্রামাণিক জানান, সিডিপিও দফতরের তরফে সমস্ত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ছ’থেকে ন’মাস বয়সী শিশুদের অন্নপ্রাশন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই মতো অনিতা তাঁর কেন্দ্রের ওই বয়সের ১০ জন শিশুর তালিকা তৈরি করে খবর দেন অভিভাবকদের। জানানো হয় সরকারি উদ্যোগে অন্নপ্রাশনের কথা।

Advertisement

এ দিন অনুষ্ঠানে ছোট ছোট শিশুদের কোলে বসিয়ে পায়েস খাইয়ে দেন অনিতা। শঙ্খধ্বনিতে মুখরিত হয় গোটা নাটমণ্ডপ চত্বর। অন্য শিশুরা এবং যাঁরা অনুষ্ঠান দেখতে এসেছিলেন, তাঁদের জন্যও ছিল পায়েস এবং রসগোল্লার ব্যবস্থা। অনিতা বলেন, ‘‘১৫ বছর ধরে চাকরি করছি। এই প্রথম আমাদের সরকারিভাবে শিশুদের অন্নপ্রাশন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরাও সেটা করেছি। অভিভাবকেরাও খুব খুশি।’’

ছেলেকে নিয়ে অনুষ্ঠানে এসেছিলেন পয়াগের বাসিন্দা সুশান্ত দত্ত। তিনি বলেন, ‘‘খুব ভাল উদ্যোগ। এই প্রথম সরকারি উদ্যোগে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের শিশুদের অন্নপ্রাশন হল। এতে কর্মীদের সঙ্গে অভিভাবকদের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে।’’ অঞ্জলি মান্না বলেন, ‘‘প্রত্যেকদিন মেয়ের জন্য এখান থেকে খিচুড়ি আর ডিম নিয়ে যাই। আজ পেলাম পায়েস-মিষ্টি। খুদেগুলোর মুখে হাসি দেখে ভাল লাগছে।’’

সরকারি হোমের শিশুদের অন্নপ্রাশনের বহু উদাহরণ রয়েছে জেলায়। সম্প্রতি মেদিনীপুরে একটি সরকারি হোমে তিনজন শিশুকে পায়েস খাওয়ান জেলাশাসক রশ্মি কমল। তবে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের এমন উদ্যোগ আগে দেখা যায়নি বলেই জানালেন স্থানীয়েরা। পাঁশকুড়া-২ ব্লকের শিশু উন্নয়ন প্রকল্প আধিকারিক প্রীতিলতা মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা সমস্ত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ছ’থেকে ন’মাস বয়সী শিশুদের অন্নপ্রাশন করার নির্দেশ দিয়েছি। সেই মতো পয়াগ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র আজ শিশুদের অন্নপ্রাশন অনুষ্ঠান করেছে। আশা করি এই উদ্যোগ অভিভাবকদের খুশি করবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement