তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর মাহাতোর। ফাইল চিত্র।
তিনি অসুস্থ। অথচ বার বার জেরায় ডেকে তাঁর উপর মানসিক চাপ তৈরি করা হচ্ছে। এমনই অভিযোগ তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর মাহাতোর। সোমবারও তাঁকে কলকাতায় সংস্থার কার্যালয়ে জেরার জন্য তলব করেছিল এনআইএ। অসুস্থতার কারণে তিনি যাননি। তবে ছত্রধরের আইনজীবী সোমবার কলকাতার বিশেষ আদালতে দরখাস্ত দাখিল করে দাবি করেছেন, তাঁর মক্কেল অসুস্থ। তবুও তাঁকে বারবার জেরার জন্য তলব করে হয়রান করছে এনআইএ। মানসিক চাপ তৈরি করা হচ্ছে। বিশেষ আদালতের বিচারক পার্থ সেন সেই আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ৩০ মার্চ দিন ধার্য করেছেন।
এর আগে শালবনির কোবরা শিবিরে তিনবার ছত্রধরকে তলব করে জেরা করেছিল এনআইএ। গত ১৫ মার্চ কলকাতায় এনআইএ-র কার্যালয়ে ছত্রধরকে ডেকে পাঠিয়ে জেরা করা হয়। ফের ১৬ মার্চ তাঁকে জেরার জন্য কলকাতায় তলব করা হয়। কিন্তু দাঁতে ব্যথার জন্য ওইদিন জেরায় হাজির হননি তিনি। যদিও ১৭ মার্চ লালগড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় দাঁতে ব্যথা নিয়েই হাজির ছিলেন ছত্রধর। বক্তৃতাও করেছিলেন। ওই সভার পরের দিনই (১৮ মার্চ) ফের ছত্রধরকে জেরার জন্য কলকাতায় তলব করে এনআইএ।
ওই দিনও সেখানে গরহাজির ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক। তবে সে দিন ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিটির বহির্বিভাগে দন্তরোগ বিশেষজ্ঞকে দেখান ছত্রধর। ওই হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ছত্রধরের একাধিক দাঁতে সংক্রমণ ছড়িয়েছে।
সূত্রের খবর, ১৮ মার্চেই এনআইএ-র তদন্তকারী অফিসার ছত্রধরের আইনজীবীকে ফোনে জানিয়ে দেন যে সোমবার চিকিৎসার নথি-সহ ছত্রধরকে জেরার জন্য কলকাতায় হাজির হতে হবে। পরে জেরার জন্য ছত্রধরের কাছে নোটিসও পাঠায় এনআইএ। তবে সেই হাজিরা এড়িয়ে এবার আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে আবেদন করেছেন তিনি।
ছত্রধরের আইনজীবী কৌশিক সিংহের দাবি, ‘‘ছত্রধর অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে বারবার তলব করে মানসিক চাপ তৈরি করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আমার মক্কেল একজন জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করছেন। এর আগে চার বার তাঁকে এনআইএ জেরা করেছে।’’ তিনি জানান, ছত্রধর অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে কেন এভাবে হয়রান করা হচ্ছে, এ ব্যাপারে এনআইএ-র ব্যাখ্যা চাওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
তবে ‘অসুস্থতা’ সত্ত্বেও মঙ্গলবার পুরুলিয়ার বাগমুন্ডিতে দলীয় সভায় হাজির ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর। তিনি বলেন, ‘‘দাঁতের অবস্থা ভাল নয়। অ্যান্টিবায়োটিক খাচ্ছি। নেত্রীর নির্দেশে পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী প্রচারে পুরুলিয়ায় এসেছি।’’