—ফাইল চিত্র।
উত্তরবঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীকে লক্ষ্য করে শনিবার গো ব্যাক স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সেই দিনেই বিরোধী দলনেতার খাসতালুক বলে পরিচিত পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে তৃণমূলের দলীয় বৈঠকের মাঝে বিজেপির পাল্টা মিছিলকে কেদ্র করে জোরদার উত্তেজনা ছড়াল। স্লোগান, পাল্টা স্লোগানে পরিস্থিতি উত্তপ্তও হয়ে ওঠে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে বওশাল থানার পুলিশ। তাদের হস্তক্ষেপে অবশেষে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, শনিবার পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচী অনুযায়ী খেজুরির হলুদবাড়ি অঞ্চলের দেবোত্তর মোড়ের কাছে একটি দলীয় বৈঠকে হাজির হন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। বিজেপির দাবি, এলাকায় উত্তেজনা ছড়াতে বোমা-বন্দুক নিয়ে ঢুকেছে বহিরাগতেরা! এই অভিযোগ তুলে বিজেপির লোকেরাই ওই জায়গায় পাল্টা মিছিল শুরু করে দেন। পাল্টা তৃণমূলের নেতা-কর্মীরাও স্লোগান দিতে থাকেন। তাতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। খেজুরির তৃণমূল নেতা শ্যামল মিশ্রের দাবি, গত কয়েক বছর খেজুরি তৃণমূলের দখলে থাকাকালীন এলাকা যথেষ্ট শান্ত ছিল। কিন্তু গত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই তৃণমূলের ওপর ক্রমাগত হামলা চলছে। তিনি বলেন, ‘‘আজ হলুদবাড়িতে তৃণমূলের দলীয় বৈঠক চলাকালীন মিছিল করে এসে উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করেছিল বিজেপি। তবে তৃণমূল এই ফাঁদে পা দেয়নি বলেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হয়েছে।’’
পাল্টা বিজেপির দাবি, ক্ষমতায় থাকাকালীন ব্যাপক দুর্নীতিতে জড়িয়েছিল তৃণমূল। সাধারণ মানুষ তাঁদের পাশে নেই। তাই এলাকায় অশান্তি ছড়াতে বহিরাগতদের এনে বোমা বন্দুকের রাজনীতি করতে চাইছে তৃণমূল। এলাকাবাসীরা তাদের রুখে দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বিধানসভা নির্বাচনে শুভেন্দুর খাসতালুক খেজুরি তৃণমূলের হাতছাড়া হয়ে বিজেপির দখলে যায়। এর পর সদ্যসমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনেও খেজুরির দু’টি ব্লকেই বিজেপির পাল্লা ভারী হয়ে যায়। এর জেরে এলাকায় কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়ে তৃণমূল। এলাকার ক্ষমতা দখলে রাখতে দুই পক্ষের লাগাতার বিতণ্ডা লেগেই রয়েছে। কোথাও তৃণমূলের সভাস্থলে হামলা, কোথাও তৃণৃমূল নেতাদের উপর হামলা, তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুরের মতো একাধিক অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। কোথাও আবার বিজেপির উপর পাল্টা আক্রমণের অভিযোগও উঠেছে। সর্বোপরি সামনের লোকসভা নির্বাচনে এলাকার দখল কার হাতে থাকবে, তা নিয়েই ক্রমাগত উত্তেজনায় কাঁপছে খেজুরি। আগামী দিনে এই অশান্তি কোন দিকে গড়ায়, সে দিকেই সকলের নজর।