তমলুক শহরে রূপনারায়ণের তীরে পিকনিক। নিজস্ব চিত্র।
কোথাও পিকনিকে বাজল দেদার ডিজে। তো কোথাও টুরিস্ট স্পটে ঢুকতেই দিল না পুলিশ। বড়দিনে শনিবার ছুটির আমেজে দিন কাটাতে গিয়ে বেমালুম গায়েব হয়ে গিয়েছে করোনা বিধিও।
এ দিন সকাল থেকেই তমলুকে রূপনারায়ণ নদের তীরবর্তী স্টিমারঘাট, আবাসবাড়ি, দক্ষিণচড়া শঙ্করআড়া এলাকায় অনেকে পিকনিক করে আসেন। পুরসভার তরফে পানীয় জল ও অস্থায়ী শৌচাগারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। অপ্রীতিকর ঘটনা রুখতে ছিল পুলিশের নজরদারি। ফলে ওই এলাকায় পিকনিক দল মাইক বা ডিজে বাজাতে পারেনি। এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন তমলুকের পুর প্রশাসক দীপেন্দ্রনারায়ণ রায়। তিনি জানিয়েছে, ডিজে-মাইক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আগে থেকেই করা হয়েছিল।
শহরে রূপনারায়ণের তীরে পুলিশ-পুরসভার নজরদারি চললেও শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের গঙ্গাখালি, ধলহরা, বিশ্বাস, নুন্নান, সাইরা, সোয়াদিঘি, জামিত্যা, খারুই এলাকায় বনভোজনে যাওয়া অনেকেই দেদার ডিজে, মাইক, সাউন্ড বক্স বাজিয়েছে। শব্দবিধি উপেক্ষা করে সেখানে মাইক বাজানো হলেও পুলিশের কোনও নজরদারি ছিল না বলে অভিযোগ। একই ছবি দেকা গিয়েছে নন্দকুমারের রূপনারায়ণের তীরবর্তী টোটাবেড়িয়া, ইচ্ছাপুর, মীরপুর ও দনিপুর এলাকাতেও। পাঁশকুড়ার ফুলের উপত্যকা দোকান্ডাতেও অল্পসল্প ভিড় ছিল। কোলাঘাটের দেনান, জামিরট্যায় পিকনিকের সময় ডিজে বাজানো হয়েছে। পরে অভিযোগ পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে ডিজে বন্ধ করে।
হলদিয়া মহকুমায় হলদি নদীর পাড়ে একাধিক পিকনিক স্পট রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় সানসেট ভিউ পয়েন্ট। তবে হলদিয়ার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বনবিষ্ণুপুর এলাকার এই জনপ্রিয় স্পটে এবার পিকনিকে ছিল নিষেধাজ্ঞা। ওই এলাকায় বন দফতরের তরফে ম্যানগ্রোভের চারা লাগানো হয়েছে। পিকনিক করা হলে সেগুলি পর্যটকেরা নষ্ট করতে পারেন বলে আশঙ্কা বনদফতরের। তবে নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে এ দিন এখানে পর্যটকদের একাধিক গাড়ি আসে। পুলিশ ব্রজলালচক মোড় থেকে পর্যটক বোঝাই বাসগুলিকে সানসেট ভিউ পয়েন্টের দিকে ঢুকতে দেয়নি। হলদিয়ার গেঁওখালি, ত্রিবেণী সঙ্গম মাঠ, পাতিখালি-সহ একাধিক এলাকায় অবশ্য বনভোজনকারীদের ভিড় ছিল দেখার মতো। প্রত্যেকটি এলাকায় পুলিশের নজরদারি ছিল। তার ফলে এবার শব্দের দাপটও ছিল অনেকটাই কম।
এদিন নিউ দিঘায় হেলিপ্যাড ময়দানে চড়ুইভাতির জন্য জায়গা নির্দিষ্ট করে দিয়েছিল ‘দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ’। তবে এত বেশি সংখ্যক পর্যটক পিকনিক করতে গিয়েছিলেন যে, শেষ পর্যন্ত তাঁদের সমুদ্র সৈকতের ধারে ঝাউ জঙ্গল বা সৈকতে বসেই চড়ুইভাতি করতে দেখা গিয়েছে। সেখানে বক্স বাজিয়ে চলেছে পর্যটকদের উদ্দাম নৃত্য। তবে জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘তমলুক-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় পিকনিক দলের ভিড় জমলেও কোথাও অপ্রীতিকর কিছু হয়নি।’’