এ বার শহরের সুরক্ষায় বসছে নজর ক্যামেরা

চুরি-ছিনতাই বাড়ছে শহর মেদিনীপুরে। শহরের রাস্তায় সিসিটিভি না থাকায় এতদিন দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করতে প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানের উপরেই নির্ভর করতে হত পুলিশকে। চুরি- ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৬ ০০:৪৬
Share:

মেদিনীপুর শহরে বসেছে সিসিটিভি ক্যামেরা। — নিজস্ব চিত্র।

চুরি-ছিনতাই বাড়ছে শহর মেদিনীপুরে। শহরের রাস্তায় সিসিটিভি না থাকায় এতদিন দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করতে প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানের উপরেই নির্ভর করতে হত পুলিশকে। চুরি- ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। দুষ্কর্মে রাশ টানতে এ বার সদর শহরে সিসিটিভি বসানো শুরু করল পুলিশ। জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, “শহরে সিসিটিভি বসানো শুরু হয়েছে। এরফলে, শহরের মধ্যে অনভিপ্রেত কিছু হলে তা ছবিতে ধরা থাকবে।” ইতিমধ্যে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোয় সিসিটিভি বসানো হয়েছে। যেমন কালেক্টরেট মোড়, কেরানিতলা, বটতলাচক, কলেজ মোড় প্রভৃতি। জেলা পুলিশের ওই কর্তার বক্তব্য, “শহরবাসীর নিরাপত্তার জন্যই এই পদক্ষেপ।”

Advertisement

জেলা পুলিশের এক সূত্রে খবর, মাস খানেক আগে থেকেই এ ব্যাপারে প্রস্তুতি শুরু হয়। প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ। পুলিশ সুপারের নির্দেশ পেয়ে শহরের কোন কোন এলাকায় সিসিটিভি বসানো হবে, তা ঠিক করতে শুরু করে মেদিনীপুরের পুলিশ।

মাস কয়েকের মধ্যে শহরে একাধিক অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে। যুবকের মৃত্যুও পর্যন্ত হয়েছে। সপ্তাহ কয়েক আগে শহরের দ্বারিবাঁধের বাসিন্দা অভয় মাইতি নামে এক যুবক খুন হন। এই ঘটনায় খুনের মামলা রুজু করেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পরিজনদের বক্তব্য, অভয়কে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। রাতের দিকে আচমকাই একদল যুবক তাঁর উপর হামলা করে। মারধর করে। জখম অবস্থায় তিনি রাস্তায় পড়েছিলেন। পরে দেখতে পেয়ে স্থানীয় কয়েকজন অভয়কে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, “দুষ্কর্মে রাশ টানতে সিসিটিভি অনেকটাই সহায়ক হবে।” তাঁর কথায়, “শহরে সিসিটিভি বসানোর ফলে একদিকে যেমন অপরাধমূলক কাজ কমবে, অন্যদিকে তেমন কোনও ঘটনা ঘটলে দ্রুত অপরাধীদের চিহ্ণিত করা সম্ভব হবে।”

Advertisement

এখন মূলত শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোয় নজর-ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। পরে কয়েকটি পাড়ার মোড়েও এই ক্যামেরা বসানো হতে পারে। জেলা পুলিশের এক সূত্রের বক্তব্য, এ ক্ষেত্রে খরচের একটা ব্যাপার রয়েছে। শহরে সিসিটিভি বসানো শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে একে একে আরও অনেক এলাকায় এটা হবে।

পশ্চিম মেদিনীপুরের সদর শহর মেদিনীপুর। শহর খুব ছোট নয়। ২৫টি ওয়ার্ড রয়েছে। শহরের জনসংখ্যা প্রায় ২ লক্ষ। রোজ নানা কাজে কয়েক হাজার মানুষ এখানে আসেন। কয়েক মাস আগে গড়বেতায় বাড়ি থেকে ডেকে এনে ভরদুপুরে দোকানের মধ্যেই এক সোনার ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে খুন করে দুষ্কৃতীরা। দোকান বা আশপাশে সিসিটিভি না-থাকায় খুনের কিনারা হয় অনেক পরে। জেলা পুলিশের একাংশও মনে করে, ওই এলাকায় সিসিটিভি থাকলে সহজেই দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করা সম্ভব হত।

গড়বেতার ওই ঘটনার পর তাই সোনা ব্যবসায়ীদের দোকানে সিসিটিভি লাগানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। মেদিনীপুরের এক ব্যবসায়ীও মানছেন, “একটা সিসিটিভি অনেকজন নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করে। দোকানের মধ্যে অনভিপ্রেত কোনও ঘটনা ঘটে গেলেও দ্রুত তার কিনারা হতে পারে।” গড়বেতার মতো ঘটনা আগে মেদিনীপুরেও ঘটেছে। ২০১৪ সালের জুনে দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরার পথে খুন হন স্বপন পাণ্ডব নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী। বাড়ির কিছু দূরে তাঁকে গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। নজর- ক্যামেরা বসিয়ে শহরে দুষ্কর্মে কতটা রাশ টানা যায়, সেটাই দেখার!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement