কাঁথি পুরসভায় ঠিকাদার অভিযোগ করেন আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে তাঁকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সম্পর্কে তথ্য চেয়েছিল পুলিশ। —প্রতীকী চিত্র।
অধিকারী পরিবার ঘনিষ্ঠ ঠিকাদার রামচন্দ্র পণ্ডার বিরুদ্ধে ‘ভুয়ো মামলা’র তদন্তে এবার মামলাকারী কাকলী পণ্ডার স্বামী তথা কাঁথি পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার শান্তনু পণ্ডাকে তলব করল সিবিআই। বুধবারই শান্তনুকে নিজাম প্যালেসে ডেকে পাঠানো হয়। এর আগে কাকলী হাই কোর্টে হলফনামা জমা করে বলেছিলেন, “প্রভাবশালীরা আমাকে মিথ্যে মামলা করতে চাপ দিয়েছিল।” ‘প্রভাবশালী’র নাম স্পষ্ট করে উল্লেখ না করলেও ওই অভিযোগপত্র কাঁথি থানায় জমা দিয়েছিলেন কাকলির স্বামী শান্তনু। এবার সেই প্রভাবশালীদের নাম জানতেই শান্তনুকে সিবিআইয়ের তলব বলে সূত্রের খবর।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ ডিসেম্বর ভুয়ো শংসাপত্র দিয়ে কাঁথি পুরসভায় ঠিকাদারি করার অভিযোগে অধিকারী পরিবার ঘনিষ্ঠ রামচন্দ্র পণ্ডার বিরুদ্ধে কাঁথি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন কাকলী। তাঁর অভিযোগপত্রটি থানায় জমা করে আসেন শান্তনু। ওই ঘটনায় রামচন্দ্রকে গ্রেফতার করে কাঁথি থানার পুলিশ। পরে তাঁকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পাল্টা কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন ওই ঠিকাদার। তাঁর অভিযোগ, তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। ঘটনাক্রমে বিচারপতি অভিযোগকারী কাকলীকে আদালতে ডেকে পাঠান। কাকলী আবার আদালতে জানান, কয়েক জন প্রভাবশালীর চাপে তিনি এই মিথ্যা মামলা রুজু করেছেন। তিনি প্রাণ সংশয়ে ভুগছেন বলেও আদালতে জানান। এর পরেই আদালত কাকলীকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সুরক্ষা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সেই সঙ্গে গোটা ঘটনার তদন্তভার তুলে দেয় সিবিআইয়ের হাতে।
ইতিমধ্যে রামচন্দ্র জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। তার পরেই তিনি দাবি করেছেন যে পুলিশি জেরার নামে তাঁর উপর অত্যাচার হয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে তাঁকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সম্পর্কে তথ্য চায় পুলিশ। এমনকি, জোর করে নন্দকুমারের একটি অজ্ঞাত জায়গায় নিয়ে গিয়ে শুভেন্দুর টাকা কোথায় রয়েছে, তা জানতে চেয়ে চাপ দেওয়া হয়। তিনি এ-ও অভিযোগ করেন, ‘‘নবান্ন থেকে বড় অফিসাররা এসে আমার ওপরে শারীরিক অত্যাচার চালিয়েছেন।’’ এই ঘটনার তদন্তে নেমে গত সোমবার কাঁথি থানার আইসি অমলেন্দু বিশ্বাসকে দীর্ঘ ক্ষণ নিজাম প্যালেসে জিজ্ঞাসাবাদ করেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। তার পর কাঁথি থানার এক এসআই-সহ দুই কনস্টেবলকে নিজাম প্যালেসে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
সিবিআই সূত্রে খবর, প্রভাবশালীদের জড়িত থাকার যে দাবি করেছিলেন কাকলী, তাঁদের কারও নাম এখনও জানা যায়নি। এই গোটা ঘটনার পিছনে ঠিক কারা রয়েছেন, এ রকম নানা তথ্য জানতে শান্তনুকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন তদন্তকারীরা।