ঝাড়গ্রামে শিবির।
অনাদায়ী বিল না মেটালে এবার কড়া পদক্ষেপ! বিল না মেটালে আদতে গ্রাহকদেরই ক্ষতি। সে কথাও রীতিমতো শিবির করে প্রচার করছে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা।
জঙ্গলমহলের অশান্তি পর্বের সময়কার বিপুল অঙ্কের বকেয়া বিল স্থগিত (লক) করে দেওয়ার পরও গ্রামীণ গ্রাহকদের একাংশ বিল মেটাচ্ছেন না। সেজন্যই এবার অনাদায়ী গ্রাহকদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার প্রক্রিয়া শুরু করতে চলেছে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। আগামী মে মাসের মধ্যে বকেয়া বিল না মেটানো হলে, সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে বলে বণ্টন সংস্থা সূত্রে জানানো হয়েছে। ফলও মিলছে হাতে নাতে। ইতিমধ্যেই ঝাড়গ্রাম মহকুমার পাঁচটি শিবিরে ১,০৬৫ জন গ্রাহকের অনাদায়ী বিলের দশ লক্ষ টাকা আদায় হয়েছে।
জঙ্গলমহলে মাওবাদী অশান্তিপর্বের দরুণ ঝাড়গ্রাম মহকুমার ছ’টি ব্লকের মোট ১ লক্ষ ৪৫ হাজার গ্রামীণ ‘ডোমেস্টিক’ গ্রাহকদের বকেয়া বিলের ২০ কোটি ২২ লক্ষ টাকা ‘লক’ করে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থা। এর ফলে ওই গ্রাহকদের সাড়ে পাঁচ বছরের (২০০৮ নভেম্বর-২০১৪ জুলাই) বকেয়া বিল স্থগিত হয়ে গিয়েছে। এখন ২০১৪ সালের অগস্ট থেকে বকেয়া বিল জমা দিতে হবে গ্রাহকদের। এই বিলের পরিমাণ সাড়ে ১২ কোটি টাকা। সেই টাকা আদায় করতেই পদক্ষেপ করছে বণ্টন সংস্থা।
সংস্থার ঝাড়গ্রামের ডিভিশনাল ম্যানেজার উজ্জ্বল রায় বলেন, “জঙ্গলমহলের গ্রামীণ ‘ডোমেস্টিক’ বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সুবিধার জন্য ঝাড়গ্রাম গ্রামীণ, জামবনি, গোপীবল্লভপুর-১, গোপীবল্লভপুর-২, বিনপুর-১ ও বেলপাহাড়ি ব্লকের ৫৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় পর্যায়ক্রমে শিবির করা হচ্ছে। ওই শিবির গুলিতে এলাকার বিদ্যুৎ গ্রাহকরা ‘অফ লাইনে’ বকেয়া বিল জমা দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। বিল না মেটালে কীভাবে গ্রাহকদেরই ক্ষতি তা বোঝাচ্ছেন সংস্থার কর্মীরা। এর ফলে শিবিরগুলিতে ভাল সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।” উজ্জ্বলবাবু জানান, মে মাস পর্যন্ত শিবির করা হবে। তারপর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার প্রক্রিয়া শুরু হবে। বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থা সূত্রে জানানো হয়েছে, শিবিরের পাশাপাশি, গ্রাহকরা নিজেদের এলাকার গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে গিয়েও অন লাইনে বকেয়া বিল জমা দিতে পারেন।
আজ, শনিবার জামবনির চিচিড়া, বিনপুর-১ ব্লকের নেপুরা, গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের সাতমা, শিলদার শুকজোড়ায় বিল জমা নেওয়ার শিবির হবে। কাল, রবিবার ছুটির দিন হলেও পাঁচটি শিবির হবে---শিলদার নারানপুর, বিনপুরের দহিজুড়ি, গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের আলমপুর, জামবনির চিচিড়া ও কেন্দডাংরি পঞ্চায়েতে। সোমবার ঝাড়গ্রামের আগুইবনি, জামবনির লালবাঁধ ও গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের পেটবিন্ধি পঞ্চায়েতে শিবির হবে। চলতি মার্চ মাসে এ ধরনের মোট ৩৮ টি শিবির করা হবে বলে জানিয়েছেন উজ্জ্বলবাবু। এপ্রিল মাস জুড়েও শিবির চলবে।