বুধবার ভাটার সময় জেগে ওঠা বার্জের মাথা। নিজস্ব চিত্র
কেটে গিয়েছে পুরো একটা দিন। এখনও হুগলি নদীতে ডুবে থাকা বাংলাদেশি বার্জটি উদ্ধারের কাজ শুরু হয়নি। সেই সঙ্গে ডুবে যাওয়া ওই বার্জ থেকে তেল ছড়িয়ে নদীতে দূষণের অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার বজবজ থেকে ছাই নিয়ে বাংলাদেশে যাওয়ার পথে গেঁওখালির কাছে বার্জটিতে গোলমাল দেখা দেয়। পরে সেটি একটি বয়ায় ধাক্কা মেরে ডুবে যায়। তবে তার আগেই স্থানীয় মৎস্যজীবীরা বার্জের ১১ জন নাবিককেই উদ্ধার করেন। মৎস্যজীবীদের আশঙ্কা, একটানা চব্বিশ ঘণ্টা জলের নীচে থাকায় বার্জের জ্বালানি তেল ও ‘ফ্লাই আশ’ নদীতে মিশে গিয়েছে। মঙ্গলবার নাবিকদের উদ্ধারের পর তাঁরা জানিয়েছিলেন বার্জটিতে প্রায় দেড় হাজার লিটার জ্বালানি তেল রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সকাল থেকে হুগলি নদীতে জোয়ার শুরু হওয়ায় বার্জটিকে উদ্ধারের কাজ শুরু হয়নি। হুগলি নদীর যে অংশে বার্জটি ডুবে রয়েছে, এ দিন সেখানে জলের উপরে তেল ভাসতে দেখা গিয়েছে। মৎস্যজীবীদের আশঙ্কা, নদীতে তেলের দূষণের ফলে মাছ মরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নদীগর্ভ থেকে বার্জটি উদ্ধারের বিষয়ে এদিন উপকূল রক্ষীবাহিনীর ডিআইজি মহম্মদ আস্তিক ওয়ারশি বলেন, ‘‘ভারতীয় জলপথ বিভাগের (ইন্ডিয়ান ওয়াটার ওয়েজ) সঙ্গে বার্জ উদ্ধারের বিষয়ে সঙ্গে কথা হয়েছে। তাদের দ্রুত কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে।’’ ভারতীয় জলপথ বিভাগের তরফে রামকমল ভট্টাচার্য জানান, ইন্দো-প্রোটোকল-এর রীতি অনুযায়ী বাংলাদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকের সঙ্গে সমন্বয় রেখে উদ্ধার কাজ করা হবে। ওই দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত আটটা নাগাদ বার্জ উদ্ধারে নামবে তারা। তবে উদ্ধারকাজে কমপক্ষে ৪ থেকে ৫ দিন সময় লেগে যাবে।
এদিকে, নদীর যে অংশে বার্জটি ডুবেছে তাতে সমস্যায় পড়েছেন মহিষাদলের ইমারতি ব্যবসায়ীরা। তাঁরা জানান, গেঁওখালি থেকে ইট-বালি- পাথর সহ নানা ইমারতি দ্রব্য নিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা, কাকদ্বীপ এলাকায় তাঁদের নৌকায় যাতায়াত করতে হয়। এমনই একটি মালবাহী নৌকার কর্মী শেখ নিজামুদ্দিন বলেন, ‘‘আমরা নদীর ধার বরাবর নৌকা নিয়ে যেতাম। কিন্তু হরিবল্লভপুরের কাছে বার্জটি আটকে থাকায় যাতায়াতে অসুবিধা হচ্ছে। তা ছাড়া ডুবে য়াওয়া বার্জে ধাক্কা লেগে বিপদের আশঙ্কাও রয়েছে।’’ ব্যবসায়ীদের দাবি, অবিলম্বে বার্জটি সরানোর ব্যবস্থা না করা হলে তাঁদের ব্যবসার ক্ষতি হবে।