যাত্রী নেই, বাস নামিয়ে ক্ষতিই

বাইরে থেকে দেখলে অনেকটাই সফল রাজ্য সরকার। দেশ জুড়ে বাম শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা ধর্মঘট ব্যর্থ করতে দিন-রাত এক করে প্রচার চলেছিল। ফলও মিলেছে। শুক্রবার ঘাটাল মহকুমায় দোকানপাট, স্কুল-কলেজ থেকে সমস্ত স্তরের সরকারি দফতর খোলা ছিল। স্বাভাবিক ছিল পরিবহণ ব্যবস্থাও। কিন্তু এত কিছুর পরেও আর পাঁচটা ধমর্ঘটের চেয়ে আলাদা কিছু দেখা গেল না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:৩০
Share:

প্রায় ফাঁকা বাস। শুক্রবার ঘাটালে। — নিজস্ব চিত্র।

বাইরে থেকে দেখলে অনেকটাই সফল রাজ্য সরকার। দেশ জুড়ে বাম শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা ধর্মঘট ব্যর্থ করতে দিন-রাত এক করে প্রচার চলেছিল। ফলও মিলেছে। শুক্রবার ঘাটাল মহকুমায় দোকানপাট, স্কুল-কলেজ থেকে সমস্ত স্তরের সরকারি দফতর খোলা ছিল। স্বাভাবিক ছিল পরিবহণ ব্যবস্থাও। কিন্তু এত কিছুর পরেও আর পাঁচটা ধমর্ঘটের চেয়ে আলাদা কিছু দেখা গেল না।

Advertisement

রাস্তায় বাস নামলেও যাত্রী ছিলেন অনান্য দিনের তুলনায় অনেকটাই কম। রাস্তাও ছিল প্রায় সুনসান। ঘাটালে সমস্ত দূরপাল্লা ও স্থানীয় রুটে বাস চলেছে। অধিকাংশই ফাঁকা। এতে ক্ষুব্ধ বাস মালিকেরাও। তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী তথা এক বাস মালিকের বললেন, “ঘাটাল থেকে আমার বাস হাওড়া গিয়েছিল। সাকুল্যে ৩০ জন যাত্রী উঠেছিলেন। লাভ দূরের কথা, তেল খরচও ওঠেনি।’’ স্থানীয় রুটগুলির অবস্থা আরও খারাপ। বাস মালিকরা অনেকেই বলছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর আর্জি মানতে গিয়ে ঘর থেকে টাকা দিয়েই বাস চালাতে হল।”

খোলা দোকানে দেখা মেলেনি খদ্দেরের। এমনকী ফাঁকা ছিল ওষুধের দোকানও। চিকিৎসকদের ব্যাক্তিগত চেম্বারেও রোগীর দেখা নেই। হোটেল মালিকরাও জানিয়েছেন খাবার তৈরি করে রেখেও বিক্রি হয়নি। ফলে দুপুরের পরই বাস স্ট্যান্ড থেকে বাজার— সর্বত্রই জমে উঠেছে তাসের আসর। কোনও কোনও দোকান মালিক কর্মচারীদের নিয়ে পিকনিকও সেরে ফেলছেন। আবার কেউ দোকানে বসে সময় কাটালেন খবরের কাগজ বা চুটিয়ে আড্ডা মেরে।

Advertisement

তবে ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলই বা চন্দ্রকোনার বিধায়ক ছায়া দোলই— শাসক নেতৃত্বের সকলেই, বলেছেন, ‘ধমর্ঘট ব্যর্থ।’ শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘ঘাটাল মহকুমায় এদিন সমস্ত দোকান খোলা ছিল। সকাল থেকেই সিঙ্গুর দিবস পালন হয়েছে। সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে আবীর খেলেছেন, মিছিলেও হেঁটেছেন।’’ একই সুরে ছায়াদেবীর সংক্ষিপ্ত উত্তর, ‘‘এক কথায় জনজীবন স্বাভাবিকই ছিল।”

ঘাটালের মহকুমাশাসক পিনাকীরঞ্জন প্রধান বলেন, “এ দিন জনজীবন স্বাভাবিকই ছিল। কোনও গোলমাল হয়নি। স্কুল, কলেজে, অফিসগুলিতেও হাজিরা স্বাভাবিক ছিল। কাজও হয়েছে।”

অথচ শাসক দলের জেলা কমিটির এক সদস্য স্বীকার করে বলেই ফেললেন, “আমরা উদ্যোগী হয়েছিলাম। তাই বাস চলেছে, দোকান খুলেছে। কিন্তু মানুষের ঘরে পৌঁছতে পারিনি। তাই মানুষ ঘরেই সময় কাটিয়েছেন।” ঘাটাল ব্যবসায়ী সমিতির আহ্বায়ক দেবাশিস হোড় এবং সাধারণ সম্পাদক শীতল ভৌমিকের কথায়, অন্য দিনের তুলনায় এ দিন দোকানে ক্রেতা এসেছেন অনেক কম।

এ দিন সকালেই বামেদের পক্ষ থেকে একটি মিছিল বের করা হয়। সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য অশোক সাঁতরার সাফ কথা, “লাল চোখ দেখিয়ে তো মানুষের মন জয় করা যায় না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement