পুকুরে স্নান করতে নেমে তলিয়ে গেল ভাই-বোন। স্থানীয়রা পুকুরে নেমে অজ্ঞান অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। শুক্রবার দুপুরে মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে মোহনপুরের নীলদা গ্রাম পঞ্চায়েতের ওড়িশা সংলগ্ন বিলমাধিয়া গ্রামে। মৃত প্রিয়তমা পয়ড়্যা (১১) ও তাঁর ভাই প্রীতম পয়ড়্যা (৭) ওই গ্রামেরই বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রিয়তমা ও প্রীতমের বাবা তপন পয়ড়্যা ওড়িশায় একটি রেস্তোরাঁয় কাজ করেন। মা প্রতিমাদেবী গৃহবধূ। দুই সন্তানকে নিয়ে কোনওমতে চলে অভাবের সংসার। প্রিয়তমা স্থানীয় সগরা শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। ওই স্কুলেই দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত প্রীতম। এ দিন স্কুল ছুটি থাকায় সকাল থেকেই খেলাধুলোয় মেতে ছিল দুই ভাই-বোন। প্রতিদিন বাড়ির নলকূপের জলেই স্নান করে তারা।
এ দিনই বাড়ির সকলের নজর এড়িয়ে তারা দু’জনে পড়শি সুরেন্দ্র পয়ড়্যার পুকুরে স্নান করতে যায়। দুপুরে বাড়িতে প্রিয়তমা ও প্রীতমকে দেখতে না পেয়ে শুরু হয় খোঁজ। এরপরে স্থানীয় একজন পুকুর পাড়ে সাবান কেস পড়ে থাকতে দেখেন। তাঁর সন্দেহ হওয়ায় স্থানীয়দের ডাকেন। পুকুর থেকে দু’জনকে উদ্ধার করা হয়। তাদের বাগদা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। তবে তাঁদের দেহের ময়না তদন্ত করা হয়নি। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান ফিদি মুর্মু সুরতহাল শংসাপত্র দিলে দেহ দু’টির অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
মৃতদের কাকা অপু পয়ড়্যা বলেন, ‘‘আমাদের ধারণা আগেই প্রীতম পুকুরে নেমেছিল। কিন্তু প্রীতম সাঁতার না জানায় ডুবে যাচ্ছে দেখে প্রিয়তমা বাঁচাতে যায়। তবে প্রিয়তমা সাঁতার জানলেও প্রীতমকে বাঁচাতে গিয়ে ও নিজেকেও সামলাতে পারেনি। আমরা একটু সচেতন থাকলে হয়তো এই দিনটা দেখতে হত না।” এলাকায় যান ব্লকের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ প্রদীপ পাত্র। তিনি বলেন, “ম়়ৃত দুই ছাত্র-ছাত্রীর বয়স কম হওয়ায় ময়না তদন্ত না করে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানকে দিয়ে সুরতহাল করিয়ে অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়ার ব্যবস্থা করেছি।”