সঙ্কট মেটাতে রক্ত দিলেন খোদ এসপি

জৈষ্ঠ্যের দুপুরে স্বেচ্ছায় রক্তদানের আমন্ত্রণ! নিমন্ত্রণের চিঠি ধরিয়ে করজোড়ে উদ্যোক্তাদের আর্জি ছিল, ‘এই সঙ্কটকালে আপনার রক্তের প্রতিটি বিন্দু রোগীর কাছে অমূল্য সম্পদ।’’ রক্তের সঙ্কট মেটাতে উদ্যোক্তাদের ভূমিকায় ঝাড়গ্রামের একদল সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসকদের সংগঠন ‘ডক্টর্স ফোরাম’। রবিবার দিনভর ঝাড়গ্রাম শহরে একটি বেসরকারি নার্সিংহোমের সেমিনার হলে স্বেচ্ছায় ওই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৬ ০১:১৪
Share:

রক্ত দিচ্ছেন ঝাড়গ্রামের এসপি সুখেন্দু হীরা। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

জৈষ্ঠ্যের দুপুরে স্বেচ্ছায় রক্তদানের আমন্ত্রণ! নিমন্ত্রণের চিঠি ধরিয়ে করজোড়ে উদ্যোক্তাদের আর্জি ছিল, ‘এই সঙ্কটকালে আপনার রক্তের প্রতিটি বিন্দু রোগীর কাছে অমূল্য সম্পদ।’’

Advertisement

রক্তের সঙ্কট মেটাতে উদ্যোক্তাদের ভূমিকায় ঝাড়গ্রামের একদল সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসকদের সংগঠন ‘ডক্টর্স ফোরাম’। রবিবার দিনভর ঝাড়গ্রাম শহরে একটি বেসরকারি নার্সিংহোমের সেমিনার হলে স্বেচ্ছায় ওই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। আমন্ত্রিতের তালিকায় ছিলেন প্রশাসন ও পুলিশের আধিকারিক, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, পড়ুয়া, সমাজসেবী, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব-সহ আমজনতা। আমন্ত্রিত বিশিষ্টজনের মধ্যে ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা-সহ সমাজের নানা ক্ষেত্রের নানা পেশার মানুষজন রক্তের সঙ্কট মেটাতে স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন। ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা বলেন, “সুযোগ পেলেই রক্তদান করি। আমার দফতরের কর্মী ও সাধারণ মানুষকে রক্তদানে উদ্ধুদ্ধ করার জন্য আগে নিজে রক্তদান করেছি।”

বেসরকারি ওই নার্সিংহোমের তিন তলার একটি বাতানুকূল ঘরে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত শিবিরটি চলে। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড ব্যাঙ্কের এবং ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীরা রক্ত সংগ্রহ করেন। এই শিবির থেকে ৩৫৫ ব্যাগ (ইউনিট) রক্ত সংগ্রহ করা হয়। রক্তদাতা ৩৫৫ জনের মধ্যে ১৬ জন চিকিৎসক ও ১৮ জন মহিলাও ছিলেন।

Advertisement

এই মুহূর্তে ঝাড়গ্রাম ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের ভাঁড়ার শূন্য। মেদিনীপুর ও বাঁকুড়ার অবস্থাও তথৈবচ। গরমে পূর্ব নির্ধারিত রক্তদান শিবিরগুলি বাতিল করে দিয়েছেন উদ্যোক্তারা। সরকারি হাসপাতাল ও বেসরকারি নার্সিংহোমগুলিতে রক্তের জোগান দিতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছে ব্লাড ব্যাঙ্কগুলি। সমস্যায় পড়েছেন হাসপাতাল ও নার্সিহোমগুলির কর্তৃপক্ষ। এই পরিস্থিতিতে সরকারি ও বেসরকরি চিকিৎসকরা একযোগে উদ্যোগী হওয়ায় রক্তের সংকট কিছুটা হলেও সামাল দেওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী ব্লাড ব্যাঙ্কগুলি।

উদ্যোক্তাদের তরফে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক প্রসূন ঘোষ ও গৈরিক মাজি বলেন, “রক্তের সঙ্কট মেটাতে পুলিশ সুপার, ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের কর্মী, সিআরপি জওয়ান ও সিভিক ভলান্টিয়ার-সহ সব স্তরের মানুষজন যেভাবে এগিয়ে এসেছেন তাতে আমরা অভিভূত।”

ঝাড়গ্রামের সিএমওএইচ অশ্বিনীকুমার মাঝি বলেন, “রক্তের সঙ্কট মেটাতে চিকিৎসকদের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। চিকিৎসকরা এগিয়ে আসায় সমাজের সব স্তরের মানুষ এদিন রক্তদানে উৎসাহিত হন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement