প্রতীকী চিত্র।
বিজেপি মুসলিম বিরোধী নয়, নতুন নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ভারতীয় মুসলিমদের ভয়েরও কিছু নেই। এ কথা বোঝাতে এ বার মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের বাড়ি বাড়ি যাবেন দলের সংখ্যালঘু মোর্চার নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে সংগঠনের মেদিনীপুর জোনের ১০টি সাংগঠনিক জেলার নেতাদের নিয়ে এক কর্মশালা হয়েছে। ছিলেন সংখ্যালঘু মোর্চার রাজ্য সভাপতি আলি হোসেন, মোর্চার রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন প্রমুখ। সংগঠনের কর্মীদের কী করণীয়, কর্মশালায় তা স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে।
এ দিন মেদিনীপুরের লোধাস্মৃতি ভবনে বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার এই কর্মশালা হয়েছে। ছিলেন সংগঠনের ওই সাংগঠনিক জেলাগুলির জেলা সভাপতি, মণ্ডল সভাপতিরা। দলীয় সূত্রে খবর, হাওড়া শহর, হাওড়া গ্রামীণ, তমলুক, কাঁথি, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঘাটাল, ঝাড়গ্রাম, হুগলি, শ্রীরামপুর, আরামবাগ- এই ১০টি সাংগঠনিক জেলাকে নিয়েই কর্মশালা হয়েছে। কর্মশালা শেষে বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা সংগঠনের মেদিনীপুর জোনের পর্যবেক্ষক কামাল হোসেন বলেন, ‘‘নতুন নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ভারতীয় মুসলিমদের ভয়ের কারণ নেই। কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে এটাই বোঝাবেন। মানুষকে ভুল তথ্য দেওয়া হচ্ছে। আমরা সত্যিটা জানাব।’’
হিন্দুত্ববাদী দল হিসাবে পরিচিত বিজেপি থেকে বরাবর মুখ ঘুরিয়ে থেকেছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সিংহভাগ মানুষ। নতুন নাগরিকত্ব আইনের ফলে এই মানুষের সংখ্যাটা আরও বেড়েছে বলে মনে করেন অনেকে। এ রাজ্যেও বিজেপি-বিরোধীদেরই তাঁরা সমর্থন করেন বলে মনে করে রাজনৈতিক মহল। মুসলিম মন পেতে এ বার ঝাঁপাচ্ছে গেরুয়া শিবির। রাজ্যে ক্ষমতায় আসার লক্ষ্যে দলের গা থেকে সাম্প্রদায়িকতার তকমা ঝেড়ে ফেলতে মরিয়া বিজেপি মুসলিমদের কাছে টানার কৌশল নিচ্ছে। মুসলিম ভোটব্যাঙ্ককে পাখির চোখ করছে তারা।
শুধু সংখ্যালঘু মানুষজনই নয়, নাগরিকত্ব আইন বোঝাতে প্রতিটি বাড়িতেই যাবেন বিজেপি কর্মীরা। তখন নানা প্রশ্নের উত্তর তাঁদের দিতে হবে, বিরোধীদের বক্তব্য যুক্তি দিয়ে খণ্ডন করতে হবে। সে জন্য দলের বলিয়ে-কইয়ে কর্মীদের বাছা হয়েছে। মানুষের কাছে নতুন নাগরিকত্ব আইন বোঝাতে এইসব বাছাই করা দলীয় কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিচ্ছে গেরুয়া শিবির।
১৬ থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নাগরিকত্ব আইনের খুঁটিনাটি বোঝানোর কর্মসূচি। আইনের খুঁটিনাটি লেখা লিফলেট নিয়েই বিজেপি কর্মীরা জেলার প্রতিটি মণ্ডলের প্রতিটি বাড়িতে যাবেন। তার আগে বাছাই করা কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে দলের পক্ষ থেকে। কয়েকদিন আগে দলের চন্দ্রকোনা রোড পশ্চিম মণ্ডলের উদ্যোগে এক কর্মশালায় বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি শমিত দাস নাগরিকত্ব আইনের নানাদিক তুলে ধরে সহজ সরল ভাষায় কর্মীদের বোঝান। দলের জেলা সম্পাদক মদন রুইদাস বলেন, ‘‘মানুষকে ঠিকটা জানাতে কর্মীদের আইনের খুঁটিনাটি জানানো হচ্ছে।’’ তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি নির্মল ঘোষের পাল্টা খোঁচা, ‘‘বিজেপি যতই কর্মীদের মাঠে নামাক লাভ কিছু হবে না। ওদের কর্মীরাই নাগরিকত্ব আইন চাইছেন না। তাঁরা আবার মানুষকে কী বোঝাবেন!’’