খেজুরির কামারদায় সভার মঞ্চ তৈরি চলছে শুক্রবার রাতেও। নিজস্ব চিত্র।
অনুমতি দিয়েছে হাই কোর্ট। শুক্রবার সেই নির্দেশ মেনেই খেজুরিতে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সভার প্রস্তুতি শুরু করে দেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। আজ, শনিবার খেজুরি-১ ব্লকের কামারদায় হবে ওই সভা।
তৃণমূল কর্মী দেবাশিস পন্ডাকে মারধরের ঘটনায় বিজেপির মণ্ডল সম্পাদক রবীন মান্নাকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ২ ডিসেম্বর সভার ঘোষণা আগেই করেছিলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। তবে আবেদন জানিয়েও প্রশাসনের কাছ থেকে খেজুরিতে শুভেন্দুর সভার অনুমতি মিলছিল না। শেষে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন বিজেপি নেতৃত্ব। শুক্রবার বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, শনিবার দুপুর দু’টো থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সভা করতে পারবে বিজেপি। তবে কোনও উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখা চলবে না।
এ দিন সকাল থেকেই হেঁড়িয়া-বোগা রাজ্য সড়কের ধারে একটি মাঠে শুরু হয়েছিল সভার প্রস্তুতি। বুলডোজ়ার দিয়ে জমি সমতল করা হয়। খুঁটিপুজোও করা হয়। তারপর দিনভর মঞ্চ তৈরির কাজ চলে। রাতেও আলো জ্বেলে চলে কাজ চলেছে। গোটা এলাকা জুড়ে মাইক বাঁধা হয়েছে। খেজুরি-১ এবং ২ ব্লক জুড়ে রাস্তার পাশে পতাকা বেঁধেছেন বিজেপি কর্মীরা। শুভেন্দু-সহ একাধিক বিজেপি নেতার কাটআউটে সাজানো হয়েছে কামারদা বাজার এলাকা।
শনিবারের সভায় প্রধান বক্তা শুভেন্দু ছাড়াও বিজেপির জেলা সভাপতি অরূপ দাস-সহ জেলার দলীয় বিধায়করা এবং জেলা স্তরের পদাধিকারীরা হাজির থাকবেন। এ দিন সভার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে এলাকায় এসেছিলেন স্থানীয় বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিক-সহ বিজেপির জেলা এবং মণ্ডল স্তরের নেতৃত্ব। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার অন্যতম সহ-সভাপতি তাপসকুমার দোলুই বলছেন, ‘‘সভার জন্য প্রয়োজনীয় জমি ব্যবহারের অনুমতি অনেক আগেই পাওয়া গিয়েছে। হাই কোর্টও সভা করার অনুমতি দিয়েছে। শনিবার খেজুরি বিধানসভা এলাকা থেকে ১০ হাজার কর্মী হাজির থাকবেন দলের সভায়।’’
২০১০ সাল থেকে প্রতি বছর ২৪ নভেম্বর দিনটি খেজুরিতে ‘হার্মাদ মুক্তি দিবস’ হিসেবে পালন করে তৃণমূল। শুভেন্দু দলবদলের পরে ২০২১ সাল থেকে এই দিন কর্মসূচি করে বিজেপিও। তবে এ বছর বিজেপির সেই ধারায় ছেদ পড়ে। তারপরই ২ ডিসেম্বর খেজুরিতে সভা করার কথা জানিয়েছিলেন শুভেন্দু। সেই মতো কামারদায় সভার সিদ্ধান্ত নেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। সভাস্থলের জমির মালিকের অনুমতিও মেলে। তবে প্রশাসন অনুমতি দেয়নি। তারপরই হাই কোর্টে আবেদন ও অবশেষে সভার অনুমতি মঞ্জুর।
এ দিকে, গত ২৩ নভেম্বর খেজুরির বাঁশগোড়ায় এক তৃণমূল কর্মীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে বিজেপি স্থানীয় মণ্ডল সম্পাদক রবীন মান্নার বিরুদ্ধে। তাঁকে গ্রেফতার করে খেজুরি থানার পুলিশ। এই ঘটনার প্রতিবাদে খেজুরিতে বন্ধ ডেকেছিল বিজেপি, শুভেন্দু নিজে থানার সামনে অবস্থান-বিক্ষোভও করেন। এই আবহে শনিবার শুভেন্দুর সভা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে বলেই মনে করে রাজনৈতিক মহল।তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পীযূষ পন্ডার কটাক্ষ, ‘‘২৪ নভেম্বর তো কেউ বাধা দেয়নি। শুভেন্দু এবং বিজেপি ভয় পেয়ে এ বছর নিজেদের কর্মসূচি থেকে পিছু হটেছিল। শনিবারের সভাতেও খেজুরির মানুষ যাবেন না। ভয় দেখিয়ে আর অর্থের বিনিময়ে জেলার নানা প্রান্ত থেকে লোক আনার চেষ্টা করছে বিজেপি।’’