মারমুখী: নারায়ণগড় থানার সামনে। নিজস্ব চিত্র
থানা ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশকে মারধরে ধৃত সাতজন বিজেপি কর্মীর তিন দিন করে পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত।
রবিবার ধৃতদের খড়্গপুর আদালতে তোলা হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, পুলিশকে মারধর ও মারধরে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে আরও কয়েকজনের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। নারী নির্যাতন, শ্লীলতাহানি, ধর্ষণ বেড়ে যাওয়ার অভিযোগে শনিবার নারায়ণগড় থানা ঘেরাও ও স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি নিয়েছিল বিজেপির মহিলা মোর্চা। তা নিয়েই ধুন্ধুমার হয়। পুলিশকে মারধরের অভিযোগ উঠল বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে। খড়্গপুর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সুকোমলকান্তি দাস-সহ কয়েকজন পুলিশকর্মী আহত হন। পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠিচার্জের অভিযোগ করে বিজেপি।
বিজেপি জানিয়েছে, তাদের ৫৭ জন কর্মীর নামে অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে অনেকেই ঘরছাড়া। রবিবার দলের এক বৈঠকে যোগ দিতে মেদিনীপুরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘মহিলারা মিছিল করে থানায় গিয়েছিলেন। তাঁদের উপর পুলিশ লাঠি চালিয়েছে।’’ তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘পুলিশের অত্যাচার দিন দিন বাড়ছে। যদি পুলিশি অত্যাচার বন্ধ না হয় তাহলে দরকারে প্রত্যেকটা থানা আমরা ঘেরাও করব। পুলিশ সুপারের অফিসও ঘেরাও করব।’’ মেদিনীপুরের সাংসদের দাবি, পুলিশের আত্মবিশ্বাস কমে গিয়েছে। নারায়ণগড়ের ঘটনাই তার প্রমাণ। দলের নারায়ণগড় মধ্য মণ্ডলের সভাপতি শুভাশিস মহাপাত্র বলেন, ‘‘পুলিশ আমাদের কর্মী-সমর্থকদের উপরে একতরফা আক্রমণ করেছে।’’ তাঁর অভিযোগ, নারায়ণগড়ে বিজেপি শক্তিশালী। তাই মনোবল ভাঙতেই পরিকল্পনা করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে পুলিশ। যদিও জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি তথা নারায়ণগড়ের বিধায়ক প্রদ্যোত ঘোষের পাল্টা বক্তব্য, পুলিশকে মারধর করা হয়েছে। পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে।’’
পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ মানেনি পুলিশ। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজি সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘আইন মেনেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কারা থানা ঘেরাওয়ে এসে আমাদের কর্মীদের মারধর করেছে তার ভিডিয়ো ফুটেজ আমাদের কাছে রয়েছে। যারা সত্যিই জড়িত তাদের নামেই মামলা হয়েছে।’’
এদিকে শনিবারের গোলমালের পরে বিজেপি থেকে কয়েকজন তাদের দলে যোগ দিয়েছে বলে দাবি করেছে তৃণমূল। এদিন বিকেলে মকরামপুর পঞ্চায়েত এলাকায় ওই দলবদল হয়। এদিন ১৫০ জন বিজেপি কর্মী দলবদল করেছেন বলে দাবি। বিজেপির অবশ্য দাবি, তৃণমূল কয়েকটি পরিবারকে একঘরে করে দিয়ে জোর করে এই দলবদল করিয়েছে। দলের নারায়ণগড় উত্তর মণ্ডলের সভাপতি সত্যজিৎ দে বলেন, ‘‘স্বেচ্ছায় কেউ যায়নি।’’