মেদিনীপুরে বিজেপির জমায়েত। নিজস্ব চিত্র।
ব্যাঙ্ক, এটিএমের সামনে লম্বা লাইন। ধৈর্যের বাঁধ ভাঙছে জনতার। এই পরিস্থিতিতে ক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা মিছিলে হামলা করতে পারেন— এই যুক্তিতেই রবিবার শহর মেদিনীপুরে বিজেপি-র যুব সংগঠনকে মিছিল করতে দিল না পুলিশ।
সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা এবং কালো টাকা উদ্ধারে নরেন্দ্র মোদীর পদক্ষেপের সমর্থনে এ দিন দুপুরে মেদিনীপুরে মিছিলের ডাক দিয়েছিল বিজেপি-র যুব মোর্চা। বেশ কয়েকটি ব্লক থেকে সকালেই কয়েকশো কর্মী-সমর্থক হাজির হয়ে গিয়েছিলেন। ছিলেন বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায়, দলের জেলা সভাপতি ধীমান কোলে। কিন্তু মেদিনীপুরের সুভাষনগরে দলের জেলা কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল শুরুর আগেই সেখানে পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। ছিলেন খড়্গপুরের এসডিপিও সন্তোষ মণ্ডল, মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানার আইসি সুশান্ত রাজবংশী। যুব বিজেপির নেতাদের ডেকে পুলিশ-কর্তারা জানিয়ে দেন, মিছিল করা যাবে না।
কিন্তু কেন? পুলিশ-কর্তারা যুক্তি দেন, পাঁচশো-হাজারের নোট বাতিলের পরে শহরের ব্যাঙ্ক, এটিএমগুলোর সামনে এখন লম্বা লাইন। শয়ে শয়ে গ্রাহক দাঁড়িয়ে। তাঁরা যদি ক্ষুব্ধ হয়ে মিছিলে হামলা চালান তখন কী হবে! বিজেপি-র যুব নেতারা পুলিশকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, এমন কিছুই হবে না। কারণ, নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষ খুশি। তবে পুলিশ-কর্তারা কোনও কথাই শুনতে চাননি। উল্টে এক পুলিশ-কর্তাকে বলতে শোনা যায়, ‘ব্যাঙ্কগুলোর সামনে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করতে হয়েছে। এখন মিছিলে পুলিশি পাহারা দেওয়া সম্ভব নয়।” শেষমেশ মিছিল বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন বিজেপি-র যুব নেতৃত্ব। শুধু বিক্ষোভ সভা হয়।
ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিজেপি নেতৃত্ব। যুব মোর্চার জেলা সভাপতি অরূপ দাস বলেন, “এখানে গণতন্ত্র বলে কিছু নেই। পুলিশ শাসক দলের কথায় চলছে। তাই মিথ্যে অজুহাত তুলে আমাদের মিছিল করতে দিল না।’’ বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তুষারবাবুরও অভিযোগ, “উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই পুলিশ এ দিনের মিছিল ভেস্তে দিয়েছে।” পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের অবশ্য বক্তব্য, “এখন ব্যাঙ্কগুলোর সামনে লম্বা লম্বা লাইন। এই সময় শহরে মিছিল করতে বারণ করা হয়েছে। অনভিপ্রেত ঘটনা এড়াতে পুলিশের যে পদক্ষেপ করা উচিত ছিল, পুলিশ সেটাই করেছে!” আর তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “সাধারণ মানুষ বিজেপির উপর ক্ষুব্ধ। মানুষই আর বিজেপিকে মিটিং-মিছিল করতে দেবে না!”