প্রতীকী চিত্র।
রাজনীতির ময়দানে ফের করোনার ছোবল। তৃণমূল বিধায়ক সমরেশ দাসের পরে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন লোকসভা ভোটে কাঁথি কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস সামন্ত। বুধবার কলকাতায় একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান বলে দলীয় সূত্রের খবর।পেশায় অস্থিরোগের চিকিৎসক দেবাশিস মাসখানেক ধরে অসুস্থ ছিলেন। তাঁর কলকাতা চিকিৎসা চলছিল প্রথম থেকে। গত লোকসভা ভোটে বিজেপি’র হয়ে লড়ে তিনি হেরে যান। তবে ভোটের আগেই থেকেই দেবাশিস নিজের পেশা থেকে সরে এসেছিলেন। নিয়েছিলেন স্বেচ্ছাবসর।
জেলা রাজনীতিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সেই তালিকায় রয়েছেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, সৌমেন মহাপাত্র, যুব তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি সুপ্রকাশ গিরির মতো তাবড় তাবড় নেতারা। করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন এগরার বিধায়ক সমরেশ দাস। কিন্তু জেলাতে যেভাবে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘিরে ভিড় হচ্ছে, তাতে থেকে বোঝা যাচ্ছে, নেতা-কর্মীদের কোনও হুঁশই ফেরেনি।
কেন্দ্রের কৃষি বিলের প্রতিবাদে সম্প্রতি সমস্ত বিরোধী দলগুলি দফায় দফায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন। সেই সব কর্মসূচি না পালন করা স্বাস্থ্যবিধি, না মানা হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব বিধি। বর্তমানে জেলায় যা পরিস্থিতি, তাতে পুজোর মরসুমে করোনা সংক্রমণ রাজনৈতিক কর্মসূচির জন্য আরও বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। সংসদ তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারী অবশ্য বলছেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতির সুযোগ বুঝে কেন্দ্রীয় সরকার জনবিরোধী একাধিক সিদ্ধান্ত কার্যকর করছে। তাছাড়া রাজ্য সরকারকেও নানা বিষয়ে বঞ্চিত করা হচ্ছে। তাই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করা ছাড়া তো আর কোনও উপায় নেই।’’ পাশাপাশি, শিশিরের দাবি, ‘‘সংক্রমণ যাতে না পারে, সে জন্য রাজ্য নেতৃত্ব একটি নির্দিষ্ট গাইডলাইন বেঁধে দিয়েছেন। সেই মতো ব্লক এবং অঞ্চল নেতৃত্বকে কর্মসূচি রূপায়ণ করতে নির্দেশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
শাসকদলের কর্মসূচি ঘিরে স্বাস্থ্য বিধি না মানার অভিযোগ তুলছে। তবে তাদের কর্মসূচির যে ছবি সামনে আসছে, তাতেও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। এক দিন আগেই মারিশদায় এসেছিলেন বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। অভিযোগ, তাঁর কর্মসূচি এবং পথযাত্রাতে শিকেয় উঠেছিল করোনা স্বাস্থ্য বিধি। এ প্রসঙ্গে বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শাসকদলও তো করোনা বিধি মানছে না। অথচ তাদের ক্ষেত্রে প্রশাসন নীরব। তাই দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে আপাতত কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। তবে ওরা যত সংখ্যক লোক জমায়েত করবে, আমরাও ততটাই কর্মী হাজির করব।’’