জয়ের শংসাপত্র নিচ্ছেন মমতা মুর্মু। নিজস্ব চিত্র
জেলা পরিষদে দলের প্রার্থীদের মধ্যে তিনিই সর্বকনিষ্ঠ। একুশের চৌকাঠে পা রেখেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী, কন্যাশ্রী প্রকল্পের এই প্রাপককে জেলা পরিষদে প্রার্থী করে চমক দিয়েছিল তৃণমূল। কুড়ি হাজারের বেশি ভোটে জিতেছেন তিনি।
পশ্চিম মেদিনীপুরের রাজনীতিতে নতুন মুখ মমতা মুর্মু। মেদিনীপুর সদর ব্লকে জেলা পরিষদের এক আসনে শাসক দলের প্রার্থী ছিলেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মমতা। রাজনীতিতে পা রেখেই জেলা পরিষদে প্রার্থী? মমতা বলছিলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভালবাসি। তৃণমূলকে ভালবাসি। কলেজে ছাত্র রাজনীতি করেছি। মানুষের জন্য কিছু করতে চাই। তাই ভোটে দাঁড়িয়েছিলাম। আমি দলের কাছে কৃতজ্ঞ। এলাকার মানুষের কাছেও কৃতজ্ঞ।”
মেদিনীপুর সদর ব্লকের যে অংশে মমতা প্রার্থী হয়েছিলেন, সেই অংশ জোড়াফুলের শক্তঘাঁটি বলে পরিচিত। ফলে এই কন্যাশ্রীর জেলা পরিষদে পা রাখা শুধু সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করেছিলেন অনেকে। হয়েছেও তাই। বিধায়ক দীনেন রায়ের কথায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কন্যাশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে সমাজের পিছিয়ে পড়া মেয়েরা উপকৃত হয়েছে। তাতে উত্সাহিত হয়েই মমতা প্রার্থী হয়েছিল।”
বাড়ি মেদিনীপুর সদর ব্লকের পাথরার চকদৌলত গ্রামে। পরিবারে অভাব- অনটন রয়েছে। মমতার বাবা তারাপদ মুর্মুর সামান্য জমির উপর ভরসা করেই সংসার চলে। তিন ভাই- বোনের মধ্যে মমতাই বড়। তারাপদবাবু তৃণমূলের কর্মী। এক সময় পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থীও হয়েছিলেন। তারাপদবাবু দীনেন- অনুগামী। মমতার লেখাপড়ায় হাতেখড়ি স্থানীয় রাঘবচক শিশু শিক্ষা কেন্দ্রে। পরে খড়্গপুর গ্রামীণের মেউদিপুর হাইস্কুলে ভর্তি হন। পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়াশোনা সেখানে। উচ্চমাধ্যমিকের পরে ডেবরা কলেজে ভর্তি হন দর্শন নিয়ে। গত বছর স্নাতক হন। পরে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। মমতা বলছিলেন, “সাইকেল পেয়েছি। কন্যাশ্রী না- পেলে পড়াশোনা করতে পারতাম না।”
মমতা নামটা কার দেওয়া? বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রীর কথায়, “নামটা বাবারই দেওয়া। বাবার কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই সবচেয়ে বড় আদর্শ।” সামনেই স্নাতকোত্তরের প্রথম বর্ষের পরীক্ষা। আপাতত তারই প্রস্তুতিতে
ব্যস্ত মমতা।