কাঁথির একটি দোকানে বিকোচ্ছে সব দলের পতাকা। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে শাসক-বিরোধী তরজায় তেতে উঠেছে ভোটের ময়দান। কোথাও বিরোধীদের ফ্লেক্স-পোস্টার ছেঁড়ার অভিযোগ উঠছে শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আবার কোথাও বিরোধীরা শাসকের দেওয়াল লিখনে কাদা দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে। পরিস্থিতি এমন যে মুখ দেখাদেখি প্রায় বন্ধ যুযুধান দু’পক্ষের।
তবু এর মধ্যেই দেখা গিয়েছে শাসক-বিরোধী সহাবস্থানের অন্য ছবি। যার নেপথ্যে রয়েছে ভোটপ্রচার। ভোটের প্রচারের জন্য ইতিমধ্যেই রাজনৈতির দলগুলি মাঠে নেমে পড়েছে। দলের প্রতীক, প্রার্থীর নাম দেওয়া ফ্লেক্স- পোস্টারের অর্ডার দেওয়ার পাশাপাশি ব্যানার, দলের পতাকা তৈরির অর্ডার দেওয়া নিয়ে হিমশিম অবস্থা তৃণমূল, বাম, বিজেপি, কংগ্রেস সকলের। প্রতিদিনই দলের কর্মীরা হত্যে দিচ্ছেন ছাপাখানা থেকে পতাকা, ব্যানার তৈরির দোকানে। সেখানে যেমন দেখা যাচ্ছে তৃণমূলের কর্মীকে, তেমনই দেখা গিয়েছে বাম, বিজেপি কর্মীদের। অর্ডার অনুযায়ী মাল পেতে একটু দেরি হলে দোকানের সামনেই চায়ের দোকানে চলছে আড্ডা। সেখানে চায়ের পেয়ালায় রীতিমত হাসি-ঠাট্টায় মেতে উঠতে দেখা গিয়েছে সব দলের কর্মীদের।
কাঁথি শহরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পতাকা বিক্রির এমনই একটি দোকানে দেখা গেল ঘাসের উপর জোড়া ফুল, পদ্মফুল, হাত, কাস্তে-হাতুড়ি-তারা কিংবা হাতি অথবা কুঠার আঁকা পতাকা একসঙ্গে জড়াজড়ি করে পড়ে রয়েছে। দোকানের ম্যানেজার আশিস নন্দ জানালেন, দোকানে প্রায় পঁচিশ বছর কাজ করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ভোট এলেই সব দলের মধ্যে রেষারেষি, হিংসা, মারামারির খবর কাগজে পড়ি। কিন্তু বিশ্বাস করুন, দোকানে নিজের নিজের দলের পতাকা নিতে এসে যে ভাবে তাঁরা একে অন্যের সঙ্গে গল্পে মাতেন, একে অপরকে চা খাওয়ান, হাসি-মস্করা হয়। তাতে মনে হয়, যদি ভোটের ময়দানেও এমন ছবি দেখা যেত, তা হলে কত ভাল হত।’’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ক্রেতার কথায়, “সর্বদলীয় বৈঠকের কথা আলাদা। কাঁথি মহকুমার প্রায় সব দলের সহাবস্থানের এই একটাই ঠিকানা।’’