টিকিটে ধন্দ, তাও দেওয়ালে নাম

সোমবার মনোনয়ন পর্ব মিটতেই প্রচার শুরু করে দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। দেওয়াল লিখন শুরু করেছে বাম-বিজেপি। শাসক শিবিরে অবশ্য ছবিটা আলাদা।

Advertisement

অভিজিৎ চক্রবর্তী

ঘাটাল শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৮ ০১:৪৯
Share:

টিকিট ‘অনিশ্চিত’ হলেও প্রচার শুরু। চন্দ্রকোনায় চলছে দেওয়াল লিখন। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

ঘাটাল মহকুমায় পঞ্চায়েতের মোট আসন ৭০৯! অথচ শাসকদলের তরফেই মনোনয়ন জমা পড়েছে ৯৬২টি। অর্থাৎ, প্রায় ২৫৭টি আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তৃণমূলেরই একাধিক প্রার্থী। শেষ পর্যন্ত কাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে হবে, আর কাদের ভাগ্যেই বা শিকে ছিঁড়বে তা নিয়েই জোর জল্পনা শাসকদলের অন্দরে।

Advertisement

প্রকাশ্যে অবশ্য জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব সে কথা মানছেন না। তাঁদের বক্তব্য, আলাপ-আলোচনাতেই সমস্যা মিটে যাবে। তবে তা যে ততটা সহজ নয়, তা মালুম হতে শুরু করেছে সোমবার রাত থেকেই। দলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলছেন, “যে দলের টিকিট পাবে, সেই তৃণমূলের প্রার্থী। বাকিদের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই।”

সোমবার মনোনয়ন পর্ব মিটতেই প্রচার শুরু করে দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। দেওয়াল লিখন শুরু করেছে বাম-বিজেপি। শাসক শিবিরে অবশ্য ছবিটা আলাদা। প্রচারের পাশাপাশি সোমবার রাত থেকে টিকিট নিয়ে চলছে জোর লড়াই। ঘাটাল মহকুমার পাঁচটি ব্লকের ৪৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট আসন ৭০৯টি। অথচ একা তৃণমূলই ৯৬২টি মনোনয়ন জমা দিয়েছে। শাসক দলের ক্ষমতাসীন ও বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর পেশ করা মনোনয়নের সংখ্যা দেখেই কপালে ভাঁজ শাসক শিবিরে।

Advertisement

সোমবার রাত থেকে দলের প্রতীক পেতে একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার জোর লড়াইও শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, একই বুথে শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর প্রার্থীর সমর্থনে দেওয়াল লিখন শুরু হয়েছে। নেতাদের লড়াই দেখে শাসক দলের কর্মীরাও দিশেহারা। কাকে ভোট দেবেন তা নিয়ে দ্বিধায় ভোটাররাও।

মঙ্গলবার থেকেই চন্দ্রকোনা-১ ব্লকে দেওয়াল লিখনের কাজ শুরু করেছে তৃণমূল। একই বুথে দু’পক্ষই পছন্দের প্রার্থীদের নাম ধরে প্রচার করছে। একই অবস্থা চন্দ্রকোনা-২ ব্লকেও। দাসপুর ও সোনাখলি ব্লকে ছবিটা কমবেশি একই। মনোনয়ন মিটতেই বুথে বুথে তৃণমূলের দু’টি করে নিবার্চনী কার্যালয়ও গজিয়ে উঠছে। যিনি যে গোষ্ঠীর সমর্থক, তাঁকে সেই অফিসে ভিড় করতে দেখা যাচ্ছে। প্রচারও করছেন দু’পক্ষের নেতা-কর্মীরা।

অভিযোগ, দুই গোষ্ঠীর লোকেরাই ভোটের খরচের কথা বলে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা টাকাও আদায় করছেন। শাসক দলের নেতাদের কাজকর্ম দেখে সোনাখালির এক ব্যবসায়ী বলছিলেন, “কেউ তো কম যাচ্ছে না দেখছি। নিজেরা লড়াই করবে। সমস্যায় পড়ছি আমরা।” দাসপুর-১ ব্লক তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “টিকিট আমরাই পাব। তাই তো প্রচার করছি। শেষমেশ নির্দল তো আছেই।”

সব মিলিয়ে টিকিট নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর নেতাদের আকচাআকচিতে কূল রাখি না শ্যাম রাখি অবস্থা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement