প্রতীকী ছবি।
হাইকোর্টের রায়ে মনোনয়ন জমার দিন আরও এক দিন বাড়ছে। আজ, সোমবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার নির্ধারিত দিন। কিন্তু তার আগে পুলিশ আর প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়ে প্রবল সংশয়ে বাম আর বিজেপি। সেই সংশয় এতটাই যে, শাসক দলের মদতপুষ্ট হয়ে কাজ করার জন্য হলদিয়ার এসডিপিওর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানালেন সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব।
মনোনয়নের প্রথম পর্বে বিডিও,এসডিও অফিসের সামনে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের জমায়েত করে বিরোধী প্রার্থীদের আটকানোর অভিযোগ উঠেছিল। শাসক দলের আক্রমণে মনোনয়ন জমা দিতে না পারার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিল বাম, বিজেপি, কংগ্রেস সহ সব বিরোধীদল। বিরোধীদের সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্ট আরও একদিন মনোনয়ন জমার নির্দেশ দিয়েছে। আর তাতেই উজ্জীবিত বিরোধী শিবির শনিবার রাত থেকেই মনোনয়ন জমার প্রস্তুতি শুরু করে।
জেলার সুতাহাটা, নন্দীগ্রাম-১, পাঁশকুড়া, শহিদ মাতঙ্গিনী, ময়না প্রভৃতি ব্লকে মনোনয়ন জমা দিতে না পারা বামফ্রন্ট, বিজেপি, কংগ্রেস সহ বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা ফের মনোনয়ন জমার প্রস্তুতি নিয়েছে বলে দলীয় নেতৃত্বরা জানিয়েছেন। তবে বসে নেই শাসকদলও। তবে প্রথম পর্বের মতো বিরোধীদের মনোনয়ন জমা ঠেকাতে তৃণমূলের তৎপরতাও যে তুঙ্গে তারও প্রমাণ মিলেছে। রবিবার জেলার প্রায় প্রতিটি ব্লকে তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব জরুরি বৈঠকে বসেন। দলের একাংশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিরোধী দলের প্রার্থী-কর্মীদের মনোনয়ন জমা আটকাতে বিডিও অফিসের সামনে ও ভিতরে তৃণমূলের মহিলা কর্মী-সমর্থকদের জমায়েত করা হবে। প্রার্থীপদে মনোনয়নের অজুহাতে শাসক দলের মহিলা কর্মী-সমর্থকরাও মনোনয়নপত্র তোলার জন্য লাইনে দাঁড়াবেন। এর ফলে বিরোধী দলের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে গেলে শাসক দলের প্রমীলা বাহিনীর ‘দেওয়াল’ অতিক্রম করতে হবে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, আদালতের নির্দেশের পরেও বিরোধীরা যাতে মনোনয়ন জমা দিতে না পারে সেজন্য তৃণমূলের এই নয়া কৌশল।
বিরোধীরাও সেই আশঙ্কাতেই এ দিন হলদিয়ায় এসডিপিও-র বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ তুলেছেন। সিপিএম সুত্রে দাবি করা হয়েছে, সোমবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন যাতে বিরোধীরা ঢুকতে না পারে, সে জন্য সক্রিয় হয়েছেন হলদিয়ার এসডিপিও তন্ময় মুখোপাধ্যায়। পরিকল্পনা করা হয়েছে, হলদিয়ার একাধিক কারখানা এবং বন্দর থেকে কর্মীদের নিয়ে সরকারি দফতরগুলিতে জড়ো করা হবে। যাতে লাইন দেখে বিরোধীরা হতাশ হয়ে পালিয়ে যায়। এই কাজে সহযোগিতা করছেন এসডিপিও। শনিবার রাতেই এসডিপিওর বিরুদ্ধে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে আসেন সিপিএম নেতা রবীন দেব।
জেলা বিজেপি সভাপতি প্রদীপ দাস বলেন, ‘‘হলদিয়ার এসডিপিওর বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে অভিযোগ জানাব। সোমবারও যদি আমাদের আটকানোর চেষ্টা হয়, তবে পরিস্থিতির দায় নিতে হবে ওই পুলিশ আধিকারিককে।’’
যদিও বিরোধীদের অভিযোগ মানতে নারাজ তন্ময়বাবু। তিনি বলেন, ‘‘বৈধ কাগজপত্র ছাড়া কাউকে দফতরে ঢুকতে দেওয়া হয় না। শাসক দলের লোক হলে বাড়তি সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’