Mamata Banerjee

আসবেন মুখ্যমন্ত্রী, জগন্নাথ মন্দিরে জোরকদমে কাজ

পুরীর ধাঁচে সম উচ্চতার জগন্নাথ ধাম গড়ে উঠছে দিঘায়। নির্মীয়মাণ জগন্নাথধামের কাজের অগ্রগতি দেখবেন মুখ্যমন্ত্রী। দিঘায় এখন জোর কদমে চলছে মন্দিরের নির্মাণকাজ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দিঘা শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:২৫
Share:

দিঘায় পুরোনো জগন্নাথ মন্দিরের যাওয়ার পথে চৈতন্যদ্বার তৈরি হচ্ছে। —নিজস্ব চিত্র।

আগামী ১০ ডিসেম্বর পূর্ব মেদিনীপুর সফরে আসার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। নির্মীয়মাণ জগন্নাথধামের কাজের অগ্রগতি দেখবেন তিনি। দিঘায় এখন জোর কদমে চলছে মন্দিরের নির্মাণকাজ।

Advertisement

পুরীর ধাঁচে সম উচ্চতার জগন্নাথ ধাম গড়ে উঠছে দিঘায়। আগামী বছর সর্বসাধারণের জন্য তার দরজা খোলার কথা। মুখ্যমন্ত্রী আসার আগেই বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জগন্নাথধামের মূল মন্দিরে চূড়া বসানো হয়েছে। শুক্রবার বাকি মন্দিরগুলিতেও চূড়া বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, পুরীর মতোই দিঘাতেও অত্যন্ত গোপনে সব মন্দিরের মাথায় চূড়া বসানো হয়েছে।

জগন্নাথধামের মূল প্রবেশদ্বার নির্মাণ সম্পূর্ণ হয়েছে আগেই। শনিবার মন্দির চত্বরে পাথর কেটে বসানো হচ্ছিল। মূল মন্দিরের উপরেও লোহার খাঁচা বেঁধে চলছে কাজ। জগন্নাথদেবের মূল মন্দির ছাড়াও পাঁচটি মন্দির তৈরি হচ্ছে। সে সবের কাজ কিছুটা বাকি রয়েছে। মন্দির চত্বরে ভোগের ঘর নির্মাণও চলছে জোরকদমে। ভিন্‌ রাজ্য থেকে আনা রাশি রাশি পাথরের এলাকাও পরিষ্কার করা হয়েছে। সৌন্দর্যায়নের জন্য লাগানো হচ্ছে বাহারি গাছ। জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার মূর্তি এসে গিয়েছে বলে ইতিপূর্বে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। মন্দিরের সামনে ১১৬ বি জাতীয় সড়কে খেজুর গুড়ের কারবার করছিলেন কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা। তাঁরা জানালেন, রবিবারের মধ্যে প্রশাসন সব সরিয়ে নিতে বলেছে।

Advertisement

দ্বিতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে ২০১৮ সালে পুরীর সমান উচ্চতার জগন্নাথ মন্দির দিঘাতে তৈরির কথা ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওল্ড দিঘায় প্রস্তাবিত জগন্নাথ দেবের মাসির বাড়িতেই গোড়ায় জগন্নাথ মন্দির নির্মাণের ভাবনাচিন্তা করেছিল রাজ্য সরকার। পরে নিউ দিঘা স্টেশনের ধারে ভোগীবহ্মপুর মৌজায় মন্দির নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। ২০২২ সালের অক্ষয় তৃতীয়ায় ২৫ একর জমিতে জগন্নাথধাম ও সংস্কৃতি কেন্দ্র গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়। রাজ্য সরকারের তরফে নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে হিডকোকে। খরচ হচ্ছে ১৮০ কোটি টাকা।

মন্দির নির্মাণের পাশাপাশি মাসির বাড়ি থেকে জগন্নাথধাম পর্যন্ত রাস্তা চওড়া করা হয়েছে। মাসির বাড়ি যাওয়ার রাস্তার মুখে চৈতন্য দ্বার নির্মাণের কাজও অনেকটাই এগিয়েছে। দু’দিকের গাছ বাঁচিয়ে কংক্রিটের ফুটপাত তৈরি হয়েছে। ওল্ড দিঘার বিশ্ববাংলা পার্ক থেকে নিউ দিঘা পর্যন্ত সমুদ্র সৈকতের ধারে
কংক্রিটের বাঁধানো বসার জায়গা ঘষে মেজে সাফ হচ্ছে।

প্রশাসন সূত্রের খবর, আগামী ১০ ডিসেম্বর পূর্ব মেদিনীপুর সফরে আসতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওল্ড দিঘার ‘দিঘি’তে রাতে তাঁর থাকার কথা। এই আবাসস্থল নতুন করে সাজিয়েছে পূর্ত দফতর। শুক্রবার তার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝি, পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য-সহ প্রশাসনিক আধিকারিকেরা।

জানা গিয়েছে, ১১ ডিসেম্বর দিঘায় জগন্নাথ মন্দির এবং মাসির বাড়ি ঘুরে দেখবেন মুখ্যমন্ত্রী। কবে মন্দির সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে, সেই ঘোষণাও তিনি করতে পারেন। ১২ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রীর ফিরে যাওয়ার কথা। এই সফরে প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠক বা উন্নয়নী জনসভা হবে কিনা, তা এখনও মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয়নি। রামনগরের বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী অখিল গিরি বলেন, ‘‘বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন তিনি দিঘা আসবেন। জগন্নাথ মন্দিরের কাজ ঘুরে দেখবেন। শুনছি আগামী ১০ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী জেলায় আসবেন।’’

মন্দারমণির হোটেল মালিকদের সঙ্গেও মুখ্যমন্ত্রী আলোচনায় বসতে পারেন বলে বিশেষ সূত্রের খবর। তবে কাঁথির মহকুমা শাসক শৌভিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সফর সূচি চূড়ান্ত কিছু জানানো হয়নি। তবে তিনি আসবেন ধরেই সব প্রস্তুতি সারা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement