করোনা-কালেই ঘূর্ণিঝড়। বেসামাল অনেকে। খোঁজ নিল আনন্দবাজার
lockdown

করোনায় ক্ষতি, ঝড়ে সর্বনাশ  

দীর্ঘ লকডাউনে বন্ধ ছিল পানের রফতানি। বাড়ছিল ক্ষতির বহর। তার উপর আমপানের তাণ্ডব। ভেঙে তছনছ হয়ে গিয়েছে পানের বরজ। 

Advertisement

বিশ্বসিন্ধু দে

দাঁতন শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২০ ০১:৫৫
Share:

ভাঙা পানভাটা। নিজস্ব চিত্র

লকডাউনের ফলে বন্ধ হয়েছিল রফতানি। তারপর আমপানে‌ ভেঙেছে বরজ। জোড়া ধাক্কায় এখন বেসামাল অবস্থা পানচাষিদের।

Advertisement

দাঁতন ১ ব্লকের আঁইকোলা পঞ্চায়েতের ষড়রং এলাকায় গ্রামের চাষিদের কাছ থেকে পান পাতা কিনে নেন এজেন্টরা। তারপর বিশেষ পদ্ধতিতে কয়লার আঁচে সেই পান পাতায় তাপ দেওয়া হয়। সবুজ পাতা হয় হলুদ। বাড়ে স্বাদ। বাড়ে কদরও। এজেন্টরা মূলত সেই পান পাতা পাঠান উত্তরপ্রদেশে। পান তুলে বাজারজাত করতে সময় লাগে প্রায় পনেরো দিন। দীর্ঘ লকডাউনে বন্ধ ছিল পানের রফতানি। বাড়ছিল ক্ষতির বহর। তার উপর আমপানের তাণ্ডব। ভেঙে তছনছ হয়ে গিয়েছে পানের বরজ।

ষড়রংয়ের সত্যজিৎ ভক্তার এক বিঘে জমির ওপরে আছে পান বরোজ। এই বরোজের উপর নির্ভর করেই চলে সংসার। এর পাশাপাশি কাজ করতেন এজেন্ট হিসেবেও। গ্রামের ১৫-২০ জন পানচাষির কাছ থেকে পান পাতা সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। কিন্তু তা উত্তরপ্রদেশে পাঠানোর ঠিক আগেই শুরু হয় লকডাউন। সত্যজিৎ বলছিলেন, ‘‘পাঁচ লক্ষ টাকার পান পাতা জমে ছিল। উত্তরপ্রদেশে পাঠানোর মুহূর্তে লকডাউন। ফলে পুরোটাই ক্ষতি। সব পচে নষ্ট হয়েছে।’’ লকডাউনের উপর আমপানের ঘা। ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙে গিয়েছে বরজ। ভেঙেছে ভাটা (যেখানে তাপ দিয়ে তৈরি করা হয় পান পাতা)। তাঁর ক্ষতি তো হয়েছেই। যাঁদের কাছ থেকে পান পাতা সংগ্রহ করেছিলেন তাঁদেরকেও কোনও সাহায্য করতে পারছেন না তিনি। সত্যজিতের কথায়, ‘‘আমপান ভাটা ভেঙে দিয়েছে। কী করব বুঝতে পারছি না।’’ অভিযোগ, এখনও সরকারি কোনও ক্ষতিপূরণ পাননি সত্যজিৎ। তাঁর কথায়, ‘‘সরকার থেকে সাহায্য পাইনি। ক্ষতিপূরণের জন্য সমীক্ষাও করেনি পঞ্চায়েত।’’

Advertisement

আনলক শুরু হয়েছে। তবে ট্রেন চলাচল এখনও সেভাবে স্বাভাবিক হয়নি। তবে জোড়া ধাক্কার ক্ষতি কবে কাটিয়ে ওঠা যাবে তা এখনও জানা নেই সত্যজিতের মতো অনেক পরিবারের। সত্যজিতের কথায়, ‘‘প্রতি ঝুড়ি লাভ থাকত ২০০-৩০০ টাকা। চার লক্ষ দেনা বেড়ে হয়েছে এখন দশ লক্ষ। যারা কাজ করত তারাও সমস্যায়।’’ সত্যজিতের পরিবারে পাঁচজন সদস্য। স্বামী-স্ত্রী ও তিনজন মেয়ে। একজন কলেজে পড়েন। দু’জন পড়ে স্কুলে। সব মিলিয়ে অথৈ জলে।

শুধু সত্যজিৎ নন। এমন সমস্যায় আরও অনেকে। সরকারি সাহায্যের দিকে তাকিয়ে তাঁরা। জেলার কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ গিরি বলছেন, ‘‘ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।’’ (শেষ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement