ব্যাঙ্কে ঢুকে গোলমাল বাধানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের এক মহিলা কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। পরে তাঁর স্বামী দলবল নিয়ে ব্যাঙ্কে গিয়ে ম্যানেজারকে মারধর করেন বলেও অভিযোগ। চেয়ার-টেবিল উল্টে দেওয়া হয়, কম্পিউটার ফেলে দেওয়া হয়। ঘটনাটি বৃহস্পতিবার দুপুরের। পরে মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ জানান ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার জেলাশাসক এবং জেলা পুলিশ সুপারের দফতরেও অভিযোগপত্র পাঠানো হয়েছে। ওই কাউন্সিলর এবং তাঁর স্বামী অবশ্য সমস্ত অভিযোগই উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁদের পাল্টা দাবি, ব্যাঙ্ক-কর্তৃপক্ষই খারাপ আচরণ করেছেন। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “মেদিনীপুরের এক ব্যাঙ্কে একটা ঘটনা ঘটেছে। দু’তরফই অভিযোগ করেছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”
ঘটনাটি ঠিক কী? মেদিনীপুর শহরের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর রাধারানি বেরার ছেলে সুরজিত্ বেরার একটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার জর্জকোট শাখায়। সুরজিত্ সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র। তার অ্যাকাউন্টটি স্টুডেন্ট অ্যাকাউন্ট। কাউন্সিলরের দাবি, তার ছেলের অ্যাকাউন্ট থেকে কিছু টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। যা কাটার কথা নয়। কেন টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে, এই জবাব চাইতেই বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ ব্যাঙ্কে যান তৃণমূল কাউন্সিলর। অভিযোগ, ব্যাঙ্কে গিয়ে তিনি রীতিমতো হুমকি দেন। গোলমাল শুরু করেন। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ভুল স্বীকার করলেও তিনি কিছু বুঝতে চাইছিলেন না। ব্যাঙ্ক ম্যানেজার প্রণব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “সিস্টেমের ভুলেই একটা চার্জ কাটা হয়ে গিয়েছে। এই সিস্টেম তো এখান থেকে অপারেট করা হয় না। মুম্বই থেকে অপারেট করা হয়। আমি বারবার কাউন্সিলরকে তা বোঝানোর চেষ্টা করি। উনি কিছুতেই এটা বুঝতে চাইছিলেন না।”
জানা গিয়েছে, প্রথমে কাউন্সিলর একাই ব্যাঙ্কে গিয়েছিলেন। পরে বেলা ১টা নাগাদ এক যুবককে নিয়ে ব্যাঙ্কে আসেন তৃণমূল কাউন্সিলরের স্বামী কমল বেরা। তিনিও গোলমাল শুরু করেন। কিছু পরে আরও তিনজন যুবককে ডেকে নেন। এরপরই ব্যাঙ্ক ম্যানেজারকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। চেয়ার- টেবিল উল্টে দেওয়া হয়। কম্পিউটার ফেলে দেওয়া হয়। কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রও ছিঁড়ে দেওয়া হয়। ব্যাঙ্ক ম্যানেজার প্রণববাবুর কথায়, “সিস্টেমের ভুলের কথা ওরা বুঝতেই চাইছিলেন না। প্রথমে কাউন্সিলর আসেন। পরে ওঁনার স্বামী সহ কয়েকজন এসে গোলমাল শুরু করেন। আমাকে মারধরও করা হয়।’’ ব্যাঙ্কে ঢুকে গোলমালের অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন কাউন্সিলর এবং তাঁর স্বামী দু’জনেই। রাধারানিদেবীদের বক্তব্য, “এটা তেমন কোনও ব্যাপার নয়।’’ কমলবাবুর কথায়, “ব্যাঙ্ক একটা ভুল করেছিল। তাই গিয়েছিলাম। এটা সামান্য একটা ঘটনা।’’