চিকিৎসা পরিষেবার হাল ফেরাতে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম, পাঁশকুড়া ও এগরায় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল গড়া হয়েছে আগে। ইতিমধ্যে ওই সব সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হয়েছে। জেলার বিভিন্ন এলাকার ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রকেও গ্রামীণ হাসপাতালের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই সব হাসপাতালে পরিষেবা মেলে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার মহিষাদল ব্লকের বাসুলিয়া, নন্দীগ্রামের রেয়াপাড়া, ভগবানপুর গ্রামীণ হাসপাতাল চালু রয়েছে অনেক আগে। পরবর্তী সময়ে জেলার বিভিন্ন ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামো উন্নয়ন করার পাশাপাশি সেগুলিকে ৩০ শয্যা বিশিষ্ট গ্রামীণ হাসপাতালে উন্নীত করা হয়েছিল। সেই অনুযায়ী এই সব স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মী নিয়োগের অনুমোদন দিয়েছিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। অথচ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে গ্রামীণ হাসপাতালে উন্নীত করার পরও সেখানে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মী অভাবের কারণে চিকিৎসা পরিষেবার বেহাল অবস্থা নিয়ে সরব হয়েছে হাসপাতাল ও জনস্বাস্থ্য রক্ষা কমিটি। সংগঠনের কোলাঘাট ব্লক শাখার উদ্যোগে ব্লকের স্বাস্থ্য পরিষেবার বেহাল অবস্থা নিয়ে অভিযোগ তুলে সোমবার ব্লকস্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। সংগঠনের জেলা কমিটির সদস্য নারায়ণ নায়েকের অভিযোগ, ‘‘ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিকে গ্রামীণ হাসপাতাল হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গ্রামীণ হাসপাতালে যেখানে ন্যুনতম ৬ জন করে চিকিৎসক থাকার কথা কোলাঘাটে মাত্র তিন জন চিকিৎসক রয়েছেন। নন্দকুমার গ্রামীণ তিনজন চিকিৎসক রয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা পেতে হয়রানির শিকার হচ্ছেন।’’
কোলাঘাট ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, পাঁশকুড়ার উত্তর মেচগ্রাম, তমলুক ব্লকের অনন্তপুর, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের জানুবসান ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, নন্দকুমার ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, এগরা-২ ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও পটাশপুর-১ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে ইতিমধ্যে গ্রামীণ হাসপাতাল হিসেবে উন্নীত করা হয়েছে। এ বার ময়না, সুতাহাটা ও পটাশপুর-২ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে গ্রামীণ হাসপাতালে উন্নীত করার জন্য প্রস্তাব পাঠাল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘ময়না, হলদিয়ার সুতাহাটা ও পটাশপুর-২ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবন-সহ পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ করা হচ্ছে। এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে গ্রামীণ হাসপাতাল হিসেবে স্বীকৃতির জন্য রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।’’ আর অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘গ্রামীণ হাসপাতালের জন্য অতিরিক্ত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী পদের অনুমোদন হয়েছে। ধাপে ধাপে চিকিৎসক নিয়োগ হবে।’’