প্রতীকী ছবি।
প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিকে চাকরিরত শিক্ষক- শিক্ষিকাদের জন্য ‘প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং’ (পিটিটি) বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। কিন্তু যে সব শিক্ষক- শিক্ষিকাদের ওই প্রশিক্ষণ ছিল না, কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদের ‘ডিসট্যান্স ইন এলিমেন্টরি এডুকেশন’ (ডিইএলডি) প্রশিক্ষণের নির্দেশিকা দিয়েছিল। কিন্তু ওই ‘ডিইএলডি’এর প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েই বিপাকে পড়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা।
অভিযোগ, ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওপেন স্কুলিং’ (এনআইওএস) পরিচালিত ওই কোর্সে পরীক্ষা দেওয়ার পরেও রেজাল্টে তাঁদের বিভিন্ন বিষয়ের পরীক্ষায় অনুপস্থিত দেখানো হয়েছে। যা নিয়ে চরম বিভ্রান্তির মধ্যে রয়েছেন নন্দীগ্রাম, হলদিয়া, কাঁথি, রামনগর-সহ গোটা পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন স্কুলে কর্মরত প্রাথমিকের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বহু শিক্ষকের দাবি, পরীক্ষার খাতায় অনুপস্থিত দেখানোর পাশাপাশি, তাঁদের পুনরায় ভর্তির নির্দেশ দিয়েছে ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওপেন স্কুলিং’। জানা গিয়েছে, ৭ সেটেম্বরের মধ্যে ওই সব শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পুনরায় ভর্তির বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।
নন্দীগ্রামের বাসিন্দা মহুয়া মাঝি নাম এক মহিলার কথায়, ‘‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওপেন স্কুলিং নির্ধারিত স্টাডি সেন্টারে গিয়ে তিনটি পরীক্ষা দিয়েছিলাম। কিন্তু রেজাল্টে দেখি আমাকে অনুপস্থিত দেখানো হয়েছে।’’ মহুয়ার মত একই অভিযোগ করেছেন জেলার আরও কয়েকশ শিক্ষক-শিক্ষিকা। তাঁদের অভিযোগ, শাসকদল তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনগুলি প্রথমে সহায়তা করলেও, এখন তারাই পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ মে ‘ডিইএলডি’এর পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওপেন স্কুলিং’ নির্ধারিত স্টাডি সেন্টারে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল ২ জুন পর্যন্ত। ৩১ অগস্ট পরীক্ষার ফলাফল বেরোয়। ইন্টারনেটে প্রকাশিত ফলাফলে অধিকাংশ পরীক্ষার্থীকেই তিনটি বিষয়ে অনুপস্থিত দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ। পরীক্ষার্থীদের প্রশ্ন, পরীক্ষা কেন্দ্রে বসার হল টিকিট, কেন্দ্রে কর্তব্যরত পরীক্ষকের সই সম্বলিত নির্দিষ্ট নথি থাকা সত্ত্বেও কীভাবে তাঁদের পরীক্ষায় অনুপস্থিত দেখানো হয়?
এ ব্যাপারে এনআইওএসে’র দায়িত্বপ্রাপ্ত পূর্ব মেদিনীপুরের কো- অর্ডিনেটর সংযুক্তা মিত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে এনআইওএসের কো- অর্ডিনেটরদের একাংশের পরীক্ষার্থীদের ঘাড়েই দোষ চাপাচ্ছেন। তাঁদের যুক্তি, পরীক্ষার্থীরা উত্তর পত্রে নিজেদের রোল নম্বর লিখতে ভুল করেছিলেন। তাই খাতা দেখতে গিয়ে চরম অসুবিধেয় পড়তে হয়েছিল পরীক্ষকদের। তাই তাঁদের অনুপস্থিত বলে দেখানো হয়েছে। এ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সিনিয়ার কো- অর্ডিনেটর রমা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পরীক্ষার্থীদের নিজস্ব ত্রুটিতে এমন ঘটনা হয়েছে। তবে তাঁরা যাতে পুনরায় পরীক্ষা দিতে পারেন সেই সুবিধে করা হচ্ছে।’’