তামাকের বিষ থেকে মুক্ত নয় ছাত্র-ছাত্রীরাও। স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের একাংশ অল্পবয়সেই তামাকে আসক্ত হয়ে পড়ছে। বিপদ বাড়ছে পরোক্ষ ধূমপানেও। পরিস্থিতি দেখে এ বার স্কুল-কলেজে সচেতনতা কর্মসূচি শুরু করেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতর। আলোচনাসভার সঙ্গে হচ্ছে ম্যাজিক, ক্যুইজে জানানো হচ্ছে তামাকের কুফল। পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরার কথায়, “এ নিয়ে জনসচেতনতা বাড়ানো খুব জরুরি। স্কুল-কলেজে কাজটা শুরুও হয়েছে।”
দিন কয়েক আগে মেদিনীপুর নার্সিং কলেজে এই সচেতনতা শিবির হয়েছে। গত শুক্রবার শিবির হয়েছে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও। ধূমপানে ঠিক কী কী বিপদ হতে পারে শিবিরে তা জানানো হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর ঠিক করেছে, আপাতত পশ্চিম মেদিনীপুরের ২১টি ব্লকের ৩টি করে হাইস্কুলে, ৩টি মহকুমার ৩টি করে কলেজে এই কর্মসূচি হবে। জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তথা নোডাল অফিসার (তামাকজনিত রোগসমূহ) রবীন্দ্রনাথ প্রধান জানালেন, গোটা দেশে তামাক সেবনের গড় যেখানে ৩৫ শতাংশ, সেখানে এ রাজ্যে গড় ৩৬ শতাংশ। সমীক্ষা বলছে, রাজ্যের ১৩-১৫ বছর বয়সী পড়ুয়াদের ৪.৪ শতাংশ ধূমপান করে এবং ১৪.৬ শতাংশ ধূমপানের পাশাপাশি অন্য ভাবেও তামাক ব্যবহার করে। ঘরে-বাইরে ৫০ শতাংশ পড়ুয়া আবার পরোক্ষ ধূমপানের শিকার। রবীন্দ্রনাথবাবুর কথায়, “প্রতিটি সিগারেট মানুষের আয়ু ১১ মিনিট করে কমিয়ে দেয়। স্কুল-কলেজের সচেতনতা শিবিরে এই সব কথাই বলা হচ্ছে।”
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়েই স্কুল-কলেজের কাছেপিঠে বিড়ি-সিগারেট-গুটখার দোকান রমরমিয়ে চলে। নিয়ম ভেঙে সেখান থেকে তামাকজাত জিনিস কেনে নাবালকরাও। জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট অনুয়ায়ী নাবালকদের নেশার জিনিস বিক্রি করলে বাড়িয়ে সাত বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। কিন্তু সেই আইন কার্যকর করার উদ্যোগ নেই বলেই অভিযোগ। স্কুল-কলেজে সচেতনতা প্রচারে পরিস্থিতি কতটা বদলায় সেটাই দেখার।