জামিন পেলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ের গাড়িচালক আনন্দকুমার পাণ্ডে। নিজস্ব চিত্র।
শর্তসাপেক্ষে জামিন পেলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ের গাড়িচালক আনন্দকুমার পাণ্ডে। শনিবার তমলুক আদালত এই নির্দেশ দিয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানি ৭ জুন।
পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরে এক সাইকেল আরোহীকে পিষে মারার অভিযোগ উঠেছে শুভেন্দুর কনভয়ের একটি গাড়ির বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় শুক্রবার অভিযুক্ত গাড়িচালক আনন্দকুমারকে গ্রেফতার করেছিল চণ্ডীপুর থানার পুলিশ। সেই দিনই তাঁকে তমলুক আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক ১ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। এর পর শনিবার আবার ধৃত গাড়িচালককে আদালতে পেশ করা হয়। সওয়াল-জবাবের পর বিচারক ব্যক্তিগত ৫ হাজার টাকার বন্ডে ধৃতের জামিন মঞ্জুর করেন।
আনন্দকুমারের আইনজীবি কল্লোল দাস বলেন, “আমরা জানিয়েছি, কর্তব্যরত পুলিশকর্মী বা সেন্ট্রাল ফোর্স বা আর্মড ফোর্সের কোনও জওয়ানকে যদি গ্রেফতার করতে হয়, তা হলে তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো প্রয়োজন। কিন্তু সেই প্রক্রিয়া মানা হয়নি। এই যুক্তিতেই আমরা চালক আনন্দকুমার পাণ্ডের জামিনের পক্ষে সওয়াল করলাম। তমলুক জেলা দায়রা আদালতের বিচারক আমাদের আবেদন মঞ্জুর করেছেন ব্যক্তিগত ৫ হাজার টাকার বন্ডে। তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করতে হবে, এই মর্মে জামিন মিলেছে। ট্রায়াল চলবে। আমরা তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করব।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর শুভেন্দুর কনভয়ের গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয় ভৈরবপুরের বাসিন্দা বছর তেত্রিশের শেখ ইসরাফিলের। তাঁর বাড়ি ভৈরবপুরে। বৃহস্পতিবার রাত ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে। ওই ব্যক্তি চণ্ডীপুর পেট্রল পাম্পের কাছে রাস্তা পারাপার করছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, সেই সময়েই শুভেন্দুর কনভয়ের সামনের গাড়িটি তাঁকে ধাক্কা দেয়। অভিযোগ, কনভয়টি প্রচণ্ড গতিতে যুবককে ধাক্কা মারার পর ঘটনাস্থলে আর দাঁড়ায়নি। দুর্ঘটনার পরেই সেখান থেকে চলে গিয়েছে কনভয়। গুরুতর জখম অবস্থায় ইসরাফিলকে এড়াশাল গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনার পরেই দিঘাগামী ১১৬বি জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন এলাকাবাসীরা। এর পর শুক্রবার মৃতের দেহ নিয়ে মিছিল করেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।
তবে বিরোধী দলনেতার দফতর সূত্রে দাবি, যে গাড়িটির বিরুদ্ধে ধাক্কা মারার অভিযোগ উঠেছে, সেটি বুলেটপ্রুফ গাড়ি। সেই কারণেই সাধারণ গাড়ির তুলনায় সেটি বেশি ভারী। এ ছাড়াও ওই গাড়িটি শুভেন্দুর কনভয়ের থেকে অন্তত দুই থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরত্ব বজায় রেখে চলে। গাড়িটি তুলনামূলক ভারী বলেই দুর্ঘটনাগ্রস্ত ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে শনিবার তৃণমূলের বিরুদ্ধে দেহ নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ তুলেছেন শুভেন্দু। বলেন, “দুর্ঘটনা ঘটেছে, দেহ নিয়ে চলে গিয়েছে ওখানে।” তাঁর হুঁশিয়ারি, “আমি তো গোটা পশ্চিমবঙ্গের লোককে বলব, যেখানেই অ্যাক্সিডেন্ট হবে, যেখানে খুন হবে, আমাকে খবর দেবেন। আমি ওই দেহটা নিয়ে এই কালীঘাটের গলিতে ঢুকব।”