গ্রামে পুজোর প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র।
সরস্বতী পুজোয় দুর্গাপুজোর আবহ। মাঘী পূর্ণিমায় কার্যত শারদোৎসবের আনন্দে মেতে ওঠেন কাঁথি-৩ ব্লকের মারিশদা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাহিরী এলাকার বাসিন্দা। শেষ বেলায় চলছে তার চূড়ান্ত প্রস্তুতি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বাহিরী এলাকায় একটা সময় দু’একটা সরস্বতী পুজো হতো জমজমাট করে। একটি ক্লাবের দেখাদেখি আশপাশের ক্লাবও ধীরে ধীরে পুজো শুরু করে। এভাবেই বাহিরীতে পুজোর চল বাড়তে থাকে। তারপর বছর যত গড়িয়েছে, বেড়েছে পুজোর সংখ্যা। এখনসেই সংখ্যা ২০ ছাড়িয়েছে। এখানে একাধিক মোড়ে বড় করে সরস্বতী পুজো হয়। বড় কয়েকটি ক্লাব মণ্ডপে থিমের বাহার থাকে। বসে মেলা। কয়েক কিলোমিটার জুড়ে আলোক সজ্জাও দর্শনার্থীদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ।
বাহিরী ‘ফ্রেন্ডস অ্যাসেম্বলি’ ক্লাবের পুজো বেশ ধুমধাম করে হয়। ৪৮তম বছরে ক্লাবের এবারের পুজোর থিম ‘পুরনো মন্দির’। ক্লাব সম্পাদক অনিমেষ নন্দ বলেন, ‘‘অন্ধ্রপ্রদেশের মন্দিরের আদলে তৈরি করা হচ্ছে মণ্ডপ। এ বছর লেজার শো হচ্ছে। যা পুজোর বিশেষ আকর্ষণ। সব মিলিয়ে খরচ হচ্ছে ৫ লাখ টাকা।’’ ৩৩তম বছরে পা দিয়েছে ‘রেড রোজ’ ক্লাবের পুজো। এবার তাদের পুজোর থিম ‘বাহিরীর ডিগবাজি’। ক্লাব সম্পাদক সোমনাথ পন্ডা বলেন, ‘‘সবাই যা ভাবে আমরা তার উল্টো। কাঠ দিয়ে উল্টো বাড়ির আদলে মণ্ডপ হচ্ছে।যার উপরে মেঝে আর নীচে ছাদ। পুজোর জন্য ১৫ লক্ষ টাকা খরচ করা হচ্ছে।’’ বিধুবাহিরী গ্রামের বন্ধন ক্লাবে আদর্শ গ্রন্থাগার ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মণ্ডপে।
বাড়চুন পাড়া ‘আমরা ক’জন প্যারাডাইস ক্লাবের পুজো ২৫ তম বছরে পা দিয়েছে। তারা থিমের মণ্ডপ তৈরি করেছে। কোনও কোনও ক্লাবের মণ্ডপ নির্মাণের কাজ শেষের পথে। ‘বিবেকানন্দ ক্লাবে’র কর্মকর্তা মিঠু দাস, ‘বন্ধন’ ক্লাবের সম্পাদক অসীম গিরিরা বলেন, ‘‘এখানের পুজোয় কোনও রাজনৈতিক ভেদাভেদ নেই। সবাই মিলেমিশে পুজোর আয়োজন করেন। পুজোর জন্য কোনও চাঁদা সংগ্রহ করা হয় না। ক্লাবের সদস্যরাই চাঁদা দিয়ে পুজোর আয়োজন করেন।’’
পুজো সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য ব্লক প্রশাসন ও মারিশদা গ্রাম পঞ্চায়েতের সঙ্গে সমন্বয়ে ‘সরস্বতী পুজো পরিচালনা ফোরাম’ গড়ে তোলা হয়েছে। প্রতিটি পুজো কমিটিই পঞ্চায়েত ও প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে পুজো করে। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। প্রশাসনের তরফেও পুজো উদ্যোক্তাদের হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে চলতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে কাঁথি-৩ এর বিডিও দীপক ঘোষ বলছেন, ‘‘সব পুজো কমিটিদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে সাউন্ড বাক্স ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয়েছে।’’