ঘটনাস্থল: এই ফার্মেই ধর্ষণ করা হয়েছে বলে নালিশ। নিজস্ব চিত্র।
টিউশন থেকে ফেরার পথে রাস্তা থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে এক স্কুল পড়ুয়াকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল। দিনে দুপুরে পটাশপুরের রতনপুর এলাকার ওই ঘটনায় তিন অভিযুক্তই গ্রেফতার হয়েছে। তবে এতে অনেকেই দেখছেন উত্তরপ্রদেশের হাথরসের গণধর্ষণের ঘটনার ছায়া।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এগরা থানা এলাকার বাসিন্দা বছর তেরোর ওই নাবালিকা পটাশপুর-১ ব্লকের খাড়ে মামার বাড়িতে থাকে। আর্থিক দুরবাস্থার কারণে ছোট থেকে সে সেখানে থেকেই পড়াশুনা করে। সোমবার মামা বাড়ি থেকে নতুন সাইকেলে বান্ধবীদের সঙ্গে ওই বালিকা খাড় বাজারে টিউশনে যায়। টিউশন শেষে সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ সে একা মামার বাড়ি ফিরছিল। পথে মামা বাড়ির এলাকার এক পরিচিত যুবক সুব্রত মণ্ডল তার সঙ্গে দেখা করে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই যুবক নাবালিকাকে স্থানীয় কালী মন্দিরে তার এক বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করানোর কথা বলে। তাতে বিশ্বাস করে নাবালিকা সেখানে যায়। মন্দির সংলগ্ন এলাকায় বেঞ্চে অপেক্ষা করার সময় অন্য দুই যুবক সঞ্জিত মাইতি এবং রঞ্জিত দাস ওই ছাত্রীর মুখে কাপড় চাপা দিয়ে রতনপুরে একটি নতুন মুরগির ফার্মে নিয়ে যায়। সেখানেই নাবালিকার হাত ও মুখ বেঁধে তারা গণ ধর্ষণ করে এবং তা মোবাইলে রেকর্ড করে রাখে বলে অভিযোগ। ঘটনার কাউকে জানালে ধর্ষণের ভিডিয়ো সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় অভিযুক্তেরা।
বাড়ি ফিরে নির্যাতিতা কান্নাকাটি করলে বিষয়টি সামনে আসে। সোমবার রাতে পটাশপুর থানায় নাবালিকার পরিজন তিন যুবকের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করে। নাবালিকার মামা বলেন, ‘‘অভিযুক্ত যুবকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। দিনে দুপুরে এই ঘটনায় এলাকায় মহিলা এবং স্কুল ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়েও তো প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশের নিরাপত্তার বিষয়ে নজর দেওয়া দরকার।’’
অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ সঞ্জিত, সুব্রত এবং রঞ্জিতকে ওই রাতেই গ্রেফতার করে। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ পকসো আইনে মামলা রুজু করেছে। মঙ্গলবার ধৃতদের কাঁথি আদালতে তোলা হয়। নাবালিকার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ সুপার সুনীল কুমার যাদব বলেন, ‘‘ঘটনায় তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুরো ঘটনাটি এখন তদন্ত প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এই বিষয়ে বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।’’